মহালয় শুভ না অশুভ? বাঙালির কাছে মহালয় এবং তর্পনের তাত্‍পর্য কী?


জি ২৪ ঘন্টা ডিজাটাল ব্যুরো: বাঙালির সবচেয়ে বড় আবেগের নাম দুর্গাপুজো। ইতিমধ্যে পুজোর তোরজোর শুরু হয়েছে ঘরে ঘরে। পুজোর সঙ্গে মহালয়া দিনটি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। এই দিনটিতেই পিতৃপক্ষের অবসান হয় এবং দেবীপক্ষের সুচনা হয়। মহালয়, পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের মিলন ঘটায়। ঘাটে ঘাটে তর্পন করার ভিড় জমে। কথিত আছে, এই দিনটিতে প্রয়াত পূর্বপুরুষের আত্মা পৃথিবীর খুব কাছে বিরাজ করে। মহালয়ার অমাবস্যাকে শাস্ত্র অনুযায়ী বলা হয়, পিতৃ অমাবস্যা। কারণ, এ দিন পিতৃপক্ষের শেষ দিন। দেবীপক্ষের আবাহন। কথিত আছে, পিতৃপক্ষের শেষ দিন বলে মহালয়ায় আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁদের নিজেদের বংশধরদের কাছ থেকে অন্ন-জল গ্রহণ করতে মর্ত্যলোকে নেমে আসেন। বংশধরেরা তর্পণ অথবা পিন্ডদানের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন করেন। এমনকি যে কোনও কারণেই হোক, যে পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হতে পারেনি, মহালয়ায় তাঁদের শ্রাদ্ধকর্মও সম্পন্ন করে অনেক বংশধর।মহালয়া অর্থাত্‍ মহান যে আলয়, এই কথাটির ব্যাখ্যা নানা ভাবে হয়ে আসছে। যেহেতু মহলয়া তেই দেবী দুর্গার আবাহন হয়, সেহেতু অনেকের মতে দেবী স্বয়ং হলেন এই আলয় বা আশ্রয়। এছাড়া অনেকে মনে করেন, এই মহান আলয় হল পিতৃলোক। যেহেতু এই দিনটি পিতৃপক্ষের অবসান চিহ্নিত করে।

আরও পড়ুন:Bengal Weather Update: বঙ্গে ভারী বৃষ্টির তাণ্ডব! ফের বানভাসি বাংলা, আবহাওয়ার লেটেস্ট আপডেট…

আরও পড়ুন:  Bangladesh Pakistan Relation: ঢাকা সফরে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পুরনো হিসেব বুঝে নিতে চায় বাংলাদেশ!

 

মহালয়া শুভ না অশুভ এই নিয়েও অনেক বিতর্ক। কেউ বলেন এটি একটি শোকের দিন, যেহেতু পুর্বপুরুষদের স্মরণ করা হয়। ফলে এইদিনটিকে শুভ বলে চিহ্নিত করা সঙ্গত নয়। তবে হিন্দু শাস্ত্রে যে কোনও শুভ কাজের সূচনাতেই পিতৃপুরুষকে স্মরণ বা তর্পন করা হয়। যদি তর্পনের বৃহত্তর অর্থটি ধরতে হয়, তবে এই অর্থটি ইঙ্গিত দেয় জগত্‍ব্যাপী একটি মহামিলনক্ষেত্র। ফলে এই মিলনের উদযাপন কখনোই অশুভ হতে পারে না। অন্যদিকে এই দিনটি বাঙালির চিরন্তন নস্টালজিয়া। পিতৃপক্ষের শেষ দিন মানে দেবীপক্ষের সূচনা, এবং বাঙালির উত্‍সব, দুর্গাপুজো শুরু। বাঙালিরা মহালয়ার দিন শুরু করেন রেডিওতে মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার শুনে। ১৯৩২ সালে আকাশবাণী থেকে এই অনুষ্ঠানের সম্প্রচার শুরু হয়। পিতৃপক্ষের অবসানের ভোরে  এই অনুষ্ঠানটি বাঙালির জীবনে অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে।  প্রতিবছর মহালয়ার দিন রেডিওতে আমরা যে মহিষাসুরমর্দিনী শুনে থাকি তা ১৯৬৬ সালে রেকর্ড করা। যেখানে বাণীকুমারের গ্রন্থনায় চণ্ডীপাঠ করেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। 

মহালয়া নিয়ে নানা ব্যাখ্যা এবং মতবাদ রয়েছে। তার মধ্যে কোনওটাই সত্যি বা মিথ্যে যাছাই করা হয়নি কখোনওই। এছাড়া শুভ ও অশুভের দন্দ বা তর্কও ব্যক্তিগত মানুষের উপর নির্ভর করে। তবে এই দিনটি মহামিলনের কথাই স্মরণ করায়।  

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *