জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বাংলা ছবিতে সুরকাররূপে ফিরছেন শান্তনু মৈত্র । জিতের বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘কেউ বলে বিপ্লবী কেউ বলে ডাকাত’-এর সংগীত পরিচালনা করছেন। প্রদীপ কুমার নন্দী ও জিৎ প্রযোজিত এবং পথিকৃৎ বসু পরিচালিত এই ছবিতে অনন্ত সিং-এর চরিত্রে অভিনয় করছেন সুপারস্টার জিৎ। শান্তনু মৈত্রের হৃদয়স্পর্শী সুর, পথিকৃতের গল্পের চলন এবং জিতের অভিনয় এই ছবিটিকে আধুনিক বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একটি মাইলফলক করে তুলবে বলে আশাবাদী গোটা টিম।
স্বাধীনতা দিবসের সকালে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন জিত্। অনন্ত সিং হয়ে ওঠার কিছু ঝলক রয়েছে সেই ভিডিয়োতে। এই ছবির জন্য প্রস্থেটিক মেক আপ করবেন অভিনেতা। সেই মেকআপের গুরু দায়িত্ব সোমনাথ কুন্ডুর কাঁধে। ভিডিয়োর ক্যাপশনে সুপারস্টার লেখেন, “যে স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন বিপ্লবী অনন্ত সিংহ, এ দেশের বুকে আজও কি বেঁচে আছে সেই স্বপ্ন? স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা সকলকে”।
শান্তনু মৈত্র বলেন, “গল্প বিষয়টাই বরাবর আমাকে সিনেমার দিকে টেনেছে, আর স্বাধীনতা সংগ্রামী থেকে ব্যাংক ডাকাত, সেখান থেকে চলচ্চিত্র প্রযোজক হয়ে ওঠা অনন্ত সিংহের অসাধারণ এই যাত্রা আমাকে সম্পূর্ণভাবে মুগ্ধ করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, পরিচালক পথিকৃৎ এই গল্পকে জীবন্ত করে তুলতে এক অসম্ভব লড়াই করছেন, ওঁর সেই আবেগ সংক্রামক। আমি প্রথমবারের মতো জিতের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি। অনন্ত সিংহের চরিত্র গড়ে তুলতে যে নিষ্ঠা ও নিপুণতা তিনি বিনিয়োগ করছেন, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। আমি বিশ্বাস করি এই ছবি হবে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা”।
ছবির প্রেক্ষাপট
১৯৬০-এর দশকের কলকাতার পটভূমিতে নির্মিত, “অনন্ত” একজন রহস্যময় এবং দক্ষ বয়স্ক ব্যক্তির যাত্রা অনুসরণ করে, যিনি একজন ডাকাত এবং একজন বিপ্লবী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার মধ্যে দোদুল্যমান হন। গল্পটি অনন্তের জীবনকে ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে উন্মোচন করে, মাস্টারদা সূর্য সেনের নির্দেশনায় একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার সম্পৃক্ততা প্রকাশ করে। স্বাধীনতার পর, সামাজিক দুর্নীতি এবং সাধারণ মানুষের শোষণের দ্বারা হতাশ হয়ে, তিনি বঞ্চিতদের মধ্যে সম্পদ পুনর্বণ্টন করার জন্য ব্যাংক ডাকাতি এবং শক্তিশালী ব্যক্তিত্বদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ইন্সপেক্টর দেবী রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ যখন তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে, তখন অনন্তের সূক্ষ্ম পরিকল্পনা এবং সামরিক দক্ষতা তাকে এগিয়ে রাখে ও পুলিশের কাজ কঠিন হয়ে পড়ে। আখ্যানটি তার বর্তমান দিনের ডাকাতির সাথে তার করুণ অতীতকে মিশিয়ে দেয়, তার ত্যাগ, সহকর্মীদের হারানো এবং তারা যে আদর্শের জন্য লড়াই করেছিল তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা দেখায়। অবশেষে, অনন্তের কর্মকাণ্ড ন্যায়বিচার এবং অপরাধের মধ্যে অস্পষ্ট রেখাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
পরিচালক পথিকৃত বলেন, “আমি সত্যিই গর্বিত যে আমি কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক শান্তনু মৈত্রর সঙ্গে আমার আসন্ন পিরিয়ড চলচ্চিত্র কেউ বলে বিপ্লবী কেউ বলে ডাকাত–এ কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি, যা বিপ্লবী অনন্ত সিংহের বর্ণময় জীবন ও আদর্শের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। পিরিয়ড সেটিংস নিয়ে শান্তনু দার গভীর বোঝাপড়া এবং ঐতিহাসিক প্রামাণিকতাকে কালজয়ী আবেগের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পটিকে এক মহাকাব্যিক রূপ দিতে শুরু করেছে”।
“তাঁর কাজের দীর্ঘদিনের অনুরাগী হিসেবে, আমি সবসময় অনুপ্রাণিত হয়েছি যেভাবে তিনি এমন সঙ্গীত নির্মাণ করেন যা শুধু শোনা না, বরং হৃদয়ের গভীরে অনুভব করা যায়। সর্দার উধাম, ওয়াজির, পরিণীতা এবং মাদ্রাজ ক্যাফে–র মতো ছবিগুলো আমার মনে অসম্ভব জোরালো ছাপ রেখে গেছে ; প্রতিটি মিউজিকই যেন কাহিনি, আবেগ এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের এক নিখুঁত মেলবন্ধন। আমাদের বর্তমান সহযোগিতায়, আমি রোজ প্রত্যক্ষ করছি কীভাবে তিনি সুরকে ইতিহাসের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছেন, জীবন্ত করে তুলছেন শুধু যুগটিকেই নয়, বরং বিপ্লবের আসল আত্মাকে। এক জন মহীরূহ শিল্পীকে কাজ করতে দেখা সত্যিই বিরল সুযোগ, আর আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি দর্শকদের জন্য, যাতে তারা কেউ বলে বিপ্লবী কেউ বলে ডাকাত–এর জন্য তিনি যে জগৎ নির্মাণ করছেন তা উপভোগ করতে পারেন”।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)