মৃত্যুঞ্জয় দাস: ২০২৬ নির্বাচনের (West Bengal Assembly elections 2026) আগে বিষ্ণুপুর (Bishnupur) সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির ব্যাপক ভাঙন! বিজেপির (Bjp) একটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করল তৃণমূল (TMC)। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তিনজন বিজেপি অঞ্চল সদস্য তৃণমূলে যোগদান করলেন। সদস্যদের ভয় দেখিয়ে যোগদান করিয়েছে, দাবি বিজেপির। সভামঞ্চ থেকে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ককে হুঁশিয়ারি দিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, এবার ডুগডুগি বাজাব আর বাঁদর নাচ নাচাব। ওদ্কে, যেমন জাত, তেমন বাস– তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপি বিধায়কের।
সোনামুখী বিধানসভায়
সামনেই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সোনামুখী বিধানসভায় বিজেপির ব্যাপক ভাঙন। এদিন সোনামুখী শহরের রথতলায় তৃণমূলের যোগদান মেলায় তিনজন বিজেপি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করলেন। সোনামুখী ব্লকের মানিক বাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসনসংখ্যা ৯। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫টি আসনে জয়লাভ করে বিজেপি, ৪টিতে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাভাবিকভাবেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করে বিজেপি। তবে, এবার মানিক বাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭০ নম্বর বুথের বিজেপি সদস্য শ্যামলী লোহার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। স্বাভাবিকভাবেই এখন পরিসংখ্যান হল বিজেপির সদস্যসংখ্যা ৪, তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা ৫। অর্থাৎ, কিছুদিনের মধ্যেই এই গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা ডেকে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের বোর্ড গঠন করবে।
২৩ আসনের মধ্যে বিজেপি ১৬, তৃণমূলের ৭
অন্য দিকে, সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাক ঘরামির এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত অর্থাৎ, পূর্ব নবাসন গ্রাম পঞ্চায়েতে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি জয়লাভ করে ১৬টিতে তৃণমূলের আসনসংখ্যা ছিল ৭। তবে, এদিনের তৃণমূলের যোগদান মেলায় পূর্ব নবাসন গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২১ নম্বর বুথের বিজেপি সদস্য জ্যোৎস্না চৌধুরী এবং ১১১ নম্বর বুথের বিজেপি সদস্য স্বপ্না ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন। অর্থাৎ, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির আসনসংখ্যা হল ১৪ এবং তৃণমূলের আসনসংখ্যা বের হল ৯টি।
বিজেপি-তৃণমূল কথার লড়াই
তবে, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত দত্তের হুংকার, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল নেবে। যোগদান নিয়ে সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেন, বিজেপি সদস্যদের ভয় দেখিয়ে চাপ দিয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে যোগদান করিয়েছে। এই যোগদানে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস ডুবন্ত জাহাজ। সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত দত্ত স্থানীয় বিজেপি বিধায়ককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিধায়ক সাড়ে চার বছরে এলাকায় কোনও কাজ করেননি , এবার ডুগডুগি বাজাব, আর বাঁদরের নাচ নাচাব, অপেক্ষা করো। পাল্টা বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি তৃণমূলকে খোঁচা মেরে বলেন, তৃণমূলের যেমন ঝাড় তেমন বাঁশ। সর্বোপরি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা অঞ্চল সদস্যদের দাবি বিজেপিতে থেকে এলাকার কোনও উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। তাই তারা তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)