জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাঁশ (Bamboo)? বলেন কি মশাই, তারও আবার একটা দিন? আজ্ঞে হ্যাঁ! বাঁশ নিয়ে একখানি আস্ত দিন আছে, তা আমরা অনেকেই জানি না। আশ্চর্য সেই দিনটি আজই– ১৮ সেপ্টেম্বর (18 September)। বাঁশকে কেন্দ্র করে একটা স্থূল রসিকতা আমরা সকলে করি, সব সময় করি। আর এখন এমনিতেও চারিদিকে বাঁশ আর বাঁশ– ক’দিন পরেই দুর্গাপুজো, চারিদিকে প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। তা, ঘরে-বাইরে এবং ক্যালেন্ডারে যখন শুধু বাঁশ আর বাঁশ, তখন আর দেরি না করে আসুন, বিশ্ব বাঁশ দিবস (World Bamboo Day) সম্পর্কে কিছু জ্ঞান অর্জন করে নেওয়া যাক।
বিশ্ব বাঁশ দিবস
বিশ্ব বাঁশ দিবস প্রতি বছর ১৮ সেপ্টেম্বরে পালন করা হয়। দিনটির মূল লক্ষ্য হল বাঁশের অসাধারণ বহুমুখী ব্যবহার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। এর পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সকলের সামনে তুলে ধরা। দিনটি মানুষের দৈনন্দিন জীবন, পরিবেশ এবং অর্থনীতির উপর বাঁশের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু অর্গানাইজেশন
বিশ্ব বাঁশ দিবসের সূচনা করে ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু অর্গানাইজেশন (WBO)। ২০০৯ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত অষ্টম বিশ্ব বাঁশ কংগ্রেসের সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনটির ঘোষণা করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল বাঁশের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণ। WBO-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট, কায়লাশ রেশমি এই উদ্যোগের পিছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার মতে, বাঁশ প্রকৃতির এক দারুণ সম্পদ, যা পরিবেশের জন্য উপকারী। এটিকে এক বিশ্বব্যাপী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরা জরুরি।
‘সবুজ সোনা’
বাঁশ হল পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদগুলির একটি। কিছু প্রজাতির বাঁশ আছে, দিনে প্রায় ১ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে! ভাবা যায়! এটি বায়োডিগ্রেডেবল, আবার পুনর্নবীকরণযোগ্য। বাঁশকে প্রায়শই ‘সবুজ সোনা’ বা ‘গরিবের কাঠ’ বলা হয়। এর কারণ এর অসাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং বহুমুখী ব্যবহার।
পরিবেশে বাঁশ
বাঁশ প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে, অক্সিজেন উৎপাদন করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সাহায্য করে। এর শক্তিশালী শিকড় মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং মাটিকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
বাঁশ-অর্থনীতি
বাঁশ নির্মাণসামগ্রী (যেমন, মেঝে, আসবাবপত্র), টেক্সটাইল, কাগজ, হস্তশিল্প, এবং খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এর থেকে তৈরি পণ্যগুলিও পরিবেশবান্ধব এবং জৈব-পচনশীল। বাঁশভিত্তিক শিল্প হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করে, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে।
বাঁশ-সংস্কৃতি
অনেক দেশে বাঁশ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং শিল্পকলার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে, বাদ্যযন্ত্র তৈরিতে এবং ঐতিহ্যবাহী গৃহস্থালি সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
২০২৫ সালের বাঁশ-থিম
প্রতি বছর বিশ্ব বাঁশ দিবসের একটি নির্দিষ্ট থিম থাকে, যা নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর জোর দেয়। ২০২৫ সালের থিম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। পূর্ববর্তী বছরগুলির থিমগুলি বাঁশের টেকসই ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং কারুশিল্পের উপরই গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। দিনটি উদযাপনের জন্য বিভিন্ন দেশ সেমিনার, কর্মশালা, মেলা এবং প্রদর্শনী আয়োজন করে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)