রণজয় সিংহ: তীব্র রাজনৈতিক অশান্তির আবহে এবার খুনের আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের অনুগামী মহিলা তৃণমূল নেত্রী পঞ্চায়েত প্রধান শামসুন নেহার। দলেরই একাংশের ষড়যন্ত্রে খুন হতে পারেন এমনই আশঙ্কার কথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানান মালদা কালিয়াচক ২নং ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শামসুন নেহার। সেই আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত দপ্তরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
নিরাপত্তারক্ষীর দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই পুলিসের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত হতে পারেন- সেই আশঙ্কার কথাও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে পুলিসকে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনরকনম ব্যবস্থা গ্রহন করেনি পুলিস, অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের। প্রধান শামসুন নেহারের অভিযোগ, কংগ্রেস থেকে সাতজন সদস্য তৃণমূলে যোগদানের পর থেকে অশান্তি শুরু হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে কাটমানি তুলছেন এই সদস্যরা।
সম্প্রতি আবাস যোজনার ঘরের অনুমোদন এসেছে। সেই প্রকল্পের ক্ষেত্রেও ‘কাটমানি’দাবি করে। প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী নাসির আহমেদ ওরফে সাগর। এরপরই গত বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত দপ্তরে বৈঠক করার অজুহাতে তাঁর স্বামী নাসির আহমেদের উপর চড়াও হয়। লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করার চেষ্টা করে ফেকু মোমিন,নাসির আহমেদরা। কোনক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। বর্তমান গুরুতর জখম হয়ে এক নাসিংহোমে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর রীতিমত আতঙ্কিত তিনি। খুন হয়ে যেতে পারেন এমনই আশঙ্কা করছেন তিনি।
তাঁর অভিযোগ বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। কংগ্রেসের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁকে প্রধান পদ থেকে বা এলাকা থেকে সরিয়ে তৃণমূলের দুর্নাম করতে চাইছে। কার্যত কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছেন। এলাকার সমাজবিরোধীদের মদত নিয়ে এমনটা করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। মালদা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের দলে পরিণত হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কন্ট্রোলে নেই। সিন্ডিকেটে পরিণত হয়েছে দল।
২০২৫ বিধানসভা ভোট আসন্ন। এই আবহে চতু্র্দিকে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে, ভুয়ো ভোটার নিয়ে তৃণমূলের কর্মী বৈঠকে পুলিশকে আক্রমণ রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের। পুলিশের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ আসছে বলে তাঁর দাবি। একইসঙ্গে তৃণমূলের বুথ স্তরের সভাপতি থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মীদের তাঁর নির্দেশ, পুলিশ বা প্রশাসন নয়, নিজের এলাকা নিজেরাই দেখে নেবেন, কী করতে হবে ঠিক করবেন। প্রয়োজনে থানা ঘেরাও হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। আবার ওই একই বৈঠকে সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সহমত পোষণ করলেন না মালদহের তৃণমূল নেত্রী চৈতালি সরকার।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)