জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এসে গেল কালীপুজো (Kali Puja 2025)। ‘কালী-কালী বলো রসনা’! বাঙালি শাক্তপ্রেমী। কালীভক্ত। একটা লব্জই আছে- ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালি’! কলকাতা যেন কালীক্ষেত্র। যে জাতির জাতীয় পুজো-উৎসব দুর্গা-আরাধনা, সে-জাতির প্রধান শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কালীমন্দির। কালীপুজো দীপাবলিতে শুধু গোটা দেশ নয়, বিশেষ ভাবে মেতে ওঠে এই জাতি, এই রাজ্য, এই শহর।
আলোর উৎসব
কালীপুজো মোট পাঁচদিনের উৎসব। ধনতেরাস, ভূতচতুর্দশী, কালীপুজো, দীপাবলি ও ভ্রাতৃদ্বিতীয়া-সহ এই আবহে গোটা দেশ এক আশ্চর্য আলোর উদ্ভাসে আলোকিত হয়ে ওঠে। শনিবার ১৮ অক্টোবর ধনতেরাস। রবিবার ভূতচতুর্দশী, সোমবার কালীপুজো ও দীপাবলি।
ধনতেরাস
ধনতেরাস হল দীপাবলির প্রথমদিন। এদিন নতুন বস্ত্র পরিধান, ঘরদোর পরিষ্কার করা, ঘর ফুল ও প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়। অকালমৃত্যুর অভিশাপ দূরে রাখার জন্য একটি যমপ্রদীপও জ্বালা হয় এদিন। পঞ্জিকামতে, এবার ধনতেরাস শনিবার পড়েছে, ১৮ অক্টোবর। কিন্তু এদিন কখন শুভ মুহূর্ত পড়ছে? ধনতেরাসের পূজা মুহূর্ত পড়ছে– সন্ধে ৭টা ১৬ মিনিট থেকে ৮টা ২০ মিনিট। ধনতেরাসের প্রদোষকাল সন্ধে ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে ৮টা ২০ মিনিটের মধ্যে। ত্রয়োদশী তিথি শুরু ১৮ অক্টোবর শনিবার বেলা ১২টা ১৮ মিনিট থেকে। ত্রয়োদশী তিথি শেষ হচ্ছে পরের দিন ১৯ অক্টোবর রাত ১টা ৫১ মিনিটে। ধনতেরাস উপলক্ষে সকলে মা লক্ষ্মী ও কুবের দেবতার পুজো করেন। এর পাশাপাশি ভগবান ধন্বন্তরির পুজোও করা হয়। ধনসম্পদ, উন্নতি ও সুস্বাস্থ্যের প্রার্থনা করা হয়। এই ধনতেরাসের শুভ মুহূর্তে সাধারণত সোনা, রুপো, কোনও গ্যাজেট, লক্ষ্মী ও গণেশমূর্তি, কিচেনওয়্যার ইত্যাদি কেনার একটা প্রচলন রয়েছে। ব্যবসায়ীরাও এই সময়ে বিশেষ করে পুজো-আচ্ছা করেন, যাতে তাঁদের বিক্রিবাটা ভালো হয়।
ভূতচতুর্দশী
ভূতচতুর্দশীকে নরক চতুর্দশীও বলে। ১৯ অক্টোবর রবিবার চতুর্দশী তিথি শুরু দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে। চতুর্দশী তিথি শেষ হবে ২০ অক্টোবর, দুপুর ৩টা ৪৪ মিনিটে। ভূত চতুর্দশী তিথিটি যেহেতু ১৯ অক্টোবর দুপুর থেকে শুরু হয়ে ২০ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত থাকছে, তাই তিথির দিন ও পরের দিন রীতিনীতি পালনের কিছু বিশেষ সময় রয়েছে। এই তিথিতে প্রদীপ জ্বালানোর মূল সময় হল সন্ধ্যাবেলা বা প্রদোষকাল। যেহেতু চতুর্দশী তিথি ১৯ তারিখের সন্ধ্যাবেলাতেও থাকছে, তাই পঞ্জিকাভেদে ১৯ বা ২০ তারিখের সন্ধ্যায় ১৪ প্রদীপ জ্বালানো যেতে পারে। তবে সাধারণভাবে ২০ অক্টোবর, সোমবার সূর্যাস্তের পরে প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম। দিনটিকে ‘যম চতুর্দশী’ও বলা হয়। অকালমৃত্যু এড়াতে যমরাজের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ দিকে একটি করে প্রদীপ জ্বালানো হয়। এদিন ১৪ শাকও খাওয়া রীতি।
কালীপুজো
কালীপুজোর প্রদোষকালে অলক্ষ্মীবিদায়ের পুজোরল রীতি। এই রীতি বাংলার ঘরে-ঘরে পালিত হয়। কুলো বাজিয়ে অলক্ষ্মী বিদায় করে মা লক্ষ্মীর আবাহন করা হয়। এদিন কালীপুজো হয় গভীর রাতে। হয় অমাবস্যার নিশিপালন। ২০ অক্টোবর সোমবার অমাবস্যা তিথি শুরু হবে দুপুর ৩টে ৪৫ মিনিটে, অমাবস্যা তিথি শেষ ২১ অক্টোবর, মঙ্গলবার, বিকেল ৫টা ৫৪ মিনিটে। পুজোর শুভক্ষণ (নিশীথকাল): ২০ অক্টোবর রাত ১১টা ৪১ মিনিট থেকে শুরু হয়ে রাত ১২টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত। মোট ৫০ মিনিট পুজোর শুভ সময়। তবে বহু জায়গাতেই সারা রাত পুজো হয়। সারা রাত পুজো ও ভোগদান। ভোরে প্রসাদগ্রহণ।
মা কালীর বিশেষত্ব
মা কালীকে সময় বা টাইম বলে মনে করা হয়। তিনি জগৎপ্রসবিনী, তিনিই সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের কারণ। শিব অচল। শিবকে সক্রিয় করে শক্তি। সেই শক্তি স্বয়ং কালী। কালীতত্ত্ব খুবই গভীর।
(Disclaimer: প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কোনও সুপারিশ করা হচ্ছে না।)
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)