পিয়ালী মিত্র: নতুন মোড় এসকেএম-কাণ্ডে (SSKM Molestation Incident)। এসকেএম হাসপাতালের ঘটনায় বিএসএসের ৩১৯ (পরিচয় ভাঁড়ানো) নম্বর ধারা যুক্ত করেছে পুলিস। সঙ্গে উঠে এসেছে আরও বিস্ফোরক তথ্য– চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে নাবালিকাকে নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত অমিত। হাতে এসেছে সেই সিসিটিভি ফুটেজও। নিজেকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দিয়ে দাদুর কাছ থেকে নাবালিকা নাতনিকে নিয়ে যায় সে। সে চিকিৎসকদের পোশাক পরেছিল। সেই পোশাক ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্তও করেছে পুলিস।
অভিশপ্ত মঙ্গল
এসএসকে মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের। গাইনি বিভাগের মধ্যেই এক রোগীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগের আঙুল ওঠে এনআরএস হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী অমিত মল্লিকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এক মহিলা চিকিৎসকের তরফে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ পীযূষ কুমার রায় সেই সেই অভিযোগ আউটপোস্টের পুলিস আধিকারিকদের কাছে ফরওয়ার্ড করে দেন। এরপরই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত অমিত মল্লিককে।
বুধবার ঠিক কী ঘটেছিল?
এসএসকেএম হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগে মা ও দাদুর সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে আসে ১৫ বছরের এক নাবালিকা। দুপুর ১.৫৫ মিনিট নাগাদ দাদুর কাছে নাতনিকে রেখে কাউন্টারে টিকিট করাতে যান মা। সেই সময়ে চিকিৎসকদের পরনে থাকা গাউন ও হেড ক্যাপ পরে দাদুর কাছে যায় অভিযুক্ত অমিত মল্লিক। সে নিজেকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দেয়। এবং নাবালিকাকে পরীক্ষা করার নামে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। ট্রমা কেয়ারের ভিতরে একটি প্রাইভেট শৌচালয় রয়েছে। সেই শৌচালয়ের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে যৌন নির্যাতন করে নাবালিকার। এদিকে মেয়েটির কাছে মোবাইল ছিল। আর তখনই একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন আসে নাবালিকার ফোনে। সে ফোন রিসিভ করেই বোঝে তার মা ফোন করছেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই নাবালিকা বলে, ‘আমার পুলিসের সাহায্য লাগবে।’ সেই কথা শুনেই দরজা খুলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
সিসিটিভি
বিষয়টি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অভিযোগমতো সিসিটিভি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, সত্যিই অভিযুক্ত সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছে ওই নাবালিকাকে। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, ওই ব্যক্তি হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক নন।
পোশাকরহস্য
তাহলে কেন অভিযুক্তের পরনে চিকিৎসকদের পোশাক ছিল? সেক্ষেত্রে উঠে আসছে আরও বিস্ফোরক তথ্য। সূত্রের খবর, দালাল চক্রের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্ত এনআরএস হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী অমিত। চিকিৎসকদের মতো, ডাক্তারদের পোশাকে থাকলে ধরা পড়ার আশঙ্কা কম এবং রোগীদের বিশ্বাসও অর্জন করা সম্ভব। সেই কারণেই হয়তো সে ওই পোশাকে ছিল বলে খবর সূত্রের। অভিযোগ পেয়ে তার বাড়ি থেকে সেই পোশাক বাজেয়াপ্তও করে পুলিস।
কে এই অমিত?
অভিযুক্ত অমিত মল্লিক এনআরএস হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। কার্ডিওলজি বিভাগে কর্মরত। আগে এসএসকেএমে ছিল। সেই সূত্রে এসএসকেএম ও শম্ভুনাথ পন্ডিতে তাঁর অবাধ বিচরণ! এসএসকেএম হাসপাতালের পুরনো ইউনিফর্মও রয়েছে তাঁর কাছে। প্রসঙ্গত, গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
