জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলায় ঘোষণা হলো স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR-এর দিনক্ষণ। মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর (28th October) থেকে বাংলায় SIR শুরু। ২৩ বছর পরে বাংলায় ভোটার তালিকায় (Voter List) বিশেষ নিবিড় সংশোধন হচ্ছে। এর আগে ২০০২ সালে SIR হয়েছে এ রাজ্যে। সোমবার বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলায় SIR-এর দিনক্ষণ ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে আন্দামান ও নিকোবর, ছত্তিসগড়, গোয়া, গুজরাট, কেরালা, লাক্ষাদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশে হবে এই দ্বিতীয় দফায় SIR।
‘ফ্রিজ’!
এসআইরের সময়ে প্রথমে আবেদন পত্র (এনিউমেরাশন ফর্ম) প্রিন্ট করা হবে। যে রাজ্যে এসআইআর হবে, সেখানকার ভোটদাতাদের সূচি সোমবার রাত ১২টায় ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হবে। সেই সূচিতে যাঁদের নাম, তাঁদের এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া হবে।
কী ভাবে এগোবে কাজ!
জ্ঞানেশ জানান, এসআইআরের সময়ে বহু কর্মী কমিশনের সঙ্গে কাজ করেছেন। ১০০০ ভোটার পিছু রয়েছে একটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। একটি বিধানসভা কেন্দ্রে ৩০০ থেকে ৪০০ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকে। সব কেন্দ্রে ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার থাকেন। তাঁর অধীনে কাজ করেন বিএলওরা।
বাড়ি বাড়ি ফর্ম:
আগামী ১ নভেম্বর থেকে বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) বাড়ি বাড়ি ফর্ম নিয়ে যাবেন বলে কমিশন সূত্রে খবর। প্রথমেই দিল্লি থেকে এনুমারেশন ফর্মের সফ্টকপি নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিকদের (ইআরও) পোর্টালে পাঠিয়ে দেবে কমিশন। তার পরে সেগুলি পাঠানো হবে ছাপার জন্য। এক জন ভোটারের জন্য দুটো করে এনুমারেশন ফর্ম ছাপবে কমিশন। এখন বাংলার ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭.৬৫ কোটি। অর্থাৎ, তার দ্বিগুণ ফর্ম ছাপা হবে। ওই ফর্মগুলি প্রত্যেক ভোটারের বাড়িতে পোঁছে দেবেন বিএলও-রা। ফর্মের বাকি অংশ পূরণ করে উপযুক্ত নথি-সহ জমা দিতে হবে। একটি ফর্ম সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছে থাকবে। অন্যটি বিএলও নিয়ে যাবেন।
এসআইআর-এ কার কী কাজ?
বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম দেবেন এবং তা সংগ্রহ করবেন। ইআরওরা ভোটার তালিকা তৈরি, দাবি-আপত্তি শুনানি এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবেন। এইআরও ইআরও-কে সহায়তা করবেন। ইআরও-র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথম আপিল শুনবেন ডিএম। ডিএমের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আপিল শুনবেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।
কমিশনের নির্দিষ্ট নথি কী কী
১) কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন অথবা পেনশন পান এমন পরিচয়পত্র।
২) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া যে কোনও নথি।
৩) জন্ম শংসাপত্র।
৪) পাসপোর্ট।
৫) মাধ্যমিক বা তার অধিক কোনও শিক্ষাগত শংসাপত্র।
৬) রাজ্য সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের শংসাপত্র।
৭) ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট।
৮) জাতিগত শংসাপত্র।
৯) কোনও নাগরিকের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার।
১০) স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্ট্রার।
১১) জমি অথবা বাড়ির দলিল।
এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড দেখানো যাবে। তবে তা দেখিয়ে নাগরিকত্বের দাবি করা যাবে না। কমিশন জানিয়েছে, আধার কার্ডের সঙ্গে এই ১১টি নথির যে কোনও একটি দিতে হবে। এই ১১টি নথির বাইরে কোনও নথি যদি নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারে, তবে তা-ও গ্রহণ করা হবে।
অনলাইনেও সুবিধা!
কেউ রাজ্যের বাইরে গেলে বা প্রবাসীরা অনলাইনেও ফর্ম ভরতে পারবেন।
তিন বার!
যে ভোটারদের পড়তে বা লিখতে সমস্যা রয়েছে, তাঁদের সাহায্য করবেন বিএলওরা। কখনও কোনও ভোটদাতা বাড়িতে না থাকলে তাঁর বাড়ি আবার যাবেন বিএলও। এক জন ভোটদাতার বাড়িতে তিন বার যাবেন এক জন বিএলও। প্রত্যেক বাড়িতে যাবেন বিএলও।
কাদের কাগজ দিতে হবে না?
২০০৩ সালের সূচিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের আর কোনও কাগজ দিতে হবে। কারও নিজের নাম না থাকলেও যদি বাবা-মায়ের নাম থাকে, তা হলে আর কাগজ দিতে হবে না। কমিশনের সাইটে গিয়ে এই ‘ম্যাচিং’ ভোটারেরা নিজেরাই করতে পারবেন।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক
যে সব রাজ্যে এসআইআর হবে, সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করবেন কর্মীরা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
