মৃত্যুঞ্জয় দাস: এসআইআর (SIR) বিতর্কের মাঝেই বাঁকুড়ায় ভুয়ো ভোটারের খোঁজ। আপাদমস্তক হিন্দু গ্রামের ভোটার তালিকায় (SIR Voter List) একের পর এক মুসলিম ভোটারের নাম। গ্রামে গিয়ে বিশদ জেনে রাজ্য সরকারকে তোপ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। পালটা কমিশনকে দুষল তৃণমূল কংগ্রেস।
আপাদমস্তক হিন্দু গ্রাম। গ্রামে কস্মিনকালেও কোনও সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের বসবাস ছিল না। আজও নেই। কিন্তু গ্রামের ভোটার তালিকায় বহাল তবিয়তে রয়েছে একাধিক সংখ্যালঘু মুসলিম নাম। ভোটার তালিকায় থাকা সেই সব নামের ব্যক্তিদের চেনেন না গ্রামের কেউই। তাহলে কীভাবে ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়ল সেই নামগুলি? বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের শ্যামপুর গ্রামে গিয়ে ভোটার তালিকা হাতে ভুয়ো ভোটারদের তথ্য যাচাই করে এরজন্য রাজ্য সরকারকেই দুষলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। পালটা বিজেপিকে একহাত নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তোপ দাগল তৃণমূল কংগ্রেস।
নির্বাচন কমিশনের তরফে গতকালই এরাজ্যে এসআইআর-এর বিজ্ঞপ্তি (SIR in Bengal) দেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যে ভুয়ো নাগরিকদের চিহ্নিত করে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াও কার্যত শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এরই মাঝে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এল বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের শ্যামপুর গ্রামে। এই গ্রামেই রয়েছে ২৮৫ নম্বর বুথ। এই বুথের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে মোট ১০৪৬ জন ভোটারের। সেই ভোটার তালিকায় নিজেদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে গিয়ে স্থানীয়েরা দেখেন, ওই তালিকায় একের পর এক সংখ্যালঘু ভোটারের নাম রয়েছে। ভোটার তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে সুয়েরাবানু খাতুন, ৩২২ নম্বরে রয়েছে রিপন মল্লিক, ৩২৩ নম্বরে মুস্তরা খাতুন ও ৪৮৫ নম্বরে রয়েছে আকলিন মুস্তাক মিদ্যার নাম। প্রতিটি নামের পাশে রয়েছে বাবার নাম, বাড়ির নম্বর, বয়স, ছবি এমনকি ভোটার কার্ড নম্বরও। প্রত্যেকেরই বয়স ২২ থেকে ২৩ বছর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামপুর গ্রাম তো দূরের কথা আশপাশের গ্রামেও কস্মিনকালে কোনও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস ছিল না। আজও নেই। তাহলে ওই নামগুলি কীভাবে ঢুকল ভোটার তালিকায়? হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। এপ্রসঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের ভুয়ো ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় তুলে তা রেখে দেওয়া হয়েছে। SIR চলাকালীন বিএলওদের এই তথ্য দিয়ে নামগুলি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
ওদিকে বিজেপির দাবিকে আমল না দিলেও তৃণমূল ওই ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারদের অস্তিত্ব কার্যত মেনে নিয়েছে। তাঁদের দাবি প্রযুক্তিগত ভুল বা আবেদনের ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আর এরজন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে শাসকদলের, দাবি স্বাভাবিক নিয়মেই এই ভুয়ো নামগুলি বাদ চলে যাবে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
