রক্তিমা দাস: স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR করতে গিয়ে একের পর এক বিএলও-র মৃত্যু, প্রবল কাজের চাপের অভিযোগ নিয়ে সরগরম রাজ্য। পাশাপাশি কোনও কোনও জায়গায় এমনও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে ৪ ডিসেম্বরের অনেক আগেই এসআইআর এর ফর্ম জমা দিয়ে দিতে হবে। এরকম এক পরিস্থিতিতে আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাল নির্বাচন কমিশনের সিইও অফিস।
কমিশনের করফে বলা হয়েছে রাজ্যে মোট ভোটার ৭,৬৬,৩৭,৫২৯। মোট বুথ ৮০,৬৮১ টি বুথ। অক্টোবরের ২৭ তারিখে এই ভোটারদের যা ঠিকানা আছে সেখানে ফর্ম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নতুন বুথ হতে পারে ১৪,৯৯৭টি। এটা মূলত ১২০০ ভোটারের বেশি যেসব বুথ বর্তমানে রয়েছে সেগুলো পুনর্বিন্যাস করলে এই অতিরিক্ত বুথ হবে। SIR এর কাজ করার সুবিধার জন্য এই অতিরিক্ত বুথে অনেক জেলাতেই অতিরিক্ত বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্য কাজ করছেন মোট ১,৫৩,৫৪১ বিএলও। মোট ৪.৫৫ লক্ষ ফর্ম ডিজিটাইজ করা হয়েছে । শতাংশের হিসেবে এটি ৫৯.৪ শতাংশ। এখনওপর্যন্ত ১০ লক্ষ ৩৩ হাজার ফর্ম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এরা হয়তো অ্যাবসেন্ট, ডেথ, ডুপ্লিকেট, অথবা বরাবরের জন্য যারা অন্য জায়গায় শিফট করেছেন।
এসআইআর করতে গিয়ে এখনওপর্যন্ত যেসব জেলা ভালো কাজ করেছে সেগুলি হল–
পুর্ব বর্ধমান-৬৬.৪৭
আলিপুরদুয়ার-৬৬.৪১
উত্তর দিনাজপুর -৬৫.৪৪
মালদহ-৬৫.২৩
পুর্ব মেদিনীপুর-৬৫.২৭
আরও পড়ুন-কলকাতা বিমানবন্দরে ১৩ বছর পড়েছিল আস্ত একটি বোয়িং বিমান, জানতই না এয়ার ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন-‘অরুণাচল ভারতের অংশ নয়’, ভারতীয় মহিলাকে ১৮ ঘণ্টা হেনস্থা সাংহাই বিমানবন্দরে
রাজ্যের ২০ টপ পারফরমিং বিধানসভা-
গোসাবা
ক্যানিং
ফলতা
মোথাবাড়ি
কাকদ্বীপ
কোমরপুর
সাগর
বাসন্তি
সবং
কুমার গ্রাম
পিংলা
কেতুগ্রাম
গোয়ালপোখর
কাথি উত্তর
ভাঙড়
মগরাহাট পশ্চিম
রাজ্যের ১২১ জন বিএলও ১০০ শতাংশ কাজ শেষ করেছেন। ৯০ শতাংশের বেশি কাজ করেছেন ৫৭৪২ জন। বিএলও-রা প্রচুর পরিশ্রম করছেন। কুড়ি দিনের মধ্যে সব ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাওয়া, ফর্ম দেওয়া, ফর্ম কালেক্ট করা, সব কাজে বিএলও-রা হিরোর মতো কাজ করেছেন।
কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, কমিশন জানিয়েছিল যে কন্ট্রাকচুয়াল ডেটা এন্ট্রি অপারেটর দিয়ে কাজ করা যাবে না। এক লক্ষ লোক কাজ করছে ফিল্ডে। এরমধ্যে যদি দুই একটা ভুল ভ্রান্তি হয় সেটা নজরে এলেই সঠিক করা হচ্ছে।
চার তারিখের আগেই কাজ শেষ করতে হবে এমন কোনও নির্দেশ কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। তবে অনুরোধ করা হয়েছে যদি একটু তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করা যায়। বিএলও-দের উপর চাপ হচ্ছে কোথাও কোথাও, যদি কোনও জেলায় এমন কোনও ঘটনা ঘটে বিএলও মৃত্যু হয় তাহলে আমরা সেই জেলার ডিইও দের কাছে আমরা রিপোর্ট চেয়েছি (পোষ্ট মর্টেম)। এই রিপোর্ট পেলেই আমরা ইসিআই কে সেটা পাঠিয়ে দেব।
বিএলও ছাড়া যদি কোনও বিএলএ ওটিপি স্ক্যান করে সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অভিযোগ না আসলে আমাদের কিছু বলার নেই। ১৮,৫৮,৩৮৪ ভোটারের এখনও ম্যাপিং হয়নি।
কোনও বিএলও অসুস্থ হলে পরিবর্তন হবে কী করে?
কমিশনের তরফে বলা হয় বিএলও অ্যাপয়েন্টমেন্ট জেলা স্তর থেকে হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও বিএলও অসুস্থ হলে পরিবর্তন করার কাজটা জেলা ডিইও/ইআরও নিজেরাই করতে পারেন। প্রয়োজন ভিত্তিক করতে হলে আমি সবকটা কেসেই অ্যাপ্রুভাল দিয়ে দেব, আগেই সব ডিইও-কে বলে দেওয়া আছে।
কারও কোনও পানিশমেন্ট হয়না, যদি কেউ ইনটেশনালি কিছু না করে থাকে তাহলে তার তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুল হলে সেটা সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে কোনও বিএলও-দের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরাও চাইনা কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে, তবে যদি কেউ এমন কিছু কাজ ইচ্ছাকৃতভাবে করে তাহলে তো কমিশনকে ব্যবস্থা নিতেই হবে।
পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যেখানে এস আই আর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে একজন বিএলও এর বিরুদ্ধেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সোমবার এবিষয়ে বিএলওদের ভালো কাজের নিরিখে পাঁচ জেলার তালিকা তুলে ধরলেন সিইও মনোজ কুমার আগারওয়াল।
SIR প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই রাজ্যের শাসকদল হোক কিংবা বিরোধী দলের তরফ থেকে বারবার তরফ থেকে বারবার হুমকি হুঁশিয়ারি এসেছে বিএলও ওদের বিরুদ্ধে। বিহারের উদাহরণ টেনে বি এল ওদের জেল খাটানোরও হুমকির বার্তা শোনা গিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মুখে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিলওদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন সিইও।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
