রণজয় সিংহ: মালদহে SIR-আতঙ্ক। হিয়ারিংয়ের জন্য এবার জেলাশাসকের দফতরের কর্মী পরিচয়ে ভুয়ো ফোন! ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জোত চিন্তামন গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযোগকারীর নাম রুবা বিবি। আদতে বিহারের গাইঘাটা অঞ্চলের বাসিন্দা তিনি। বিয়ের পর এখন থাকেন জোত চিন্তামন গ্রামে। ২০০২ সালে শেষবার SIR হয়েছিল বাংলায়। কিন্তু বিহারের বাসিন্দা হওয়ার স্বাভাবিক কারণেই সেই SIR-র তালিকায় নাম ছিল না রুবার বাবা-মায়ের। বস্তুত, তার আগেই প্রয়াত হন দু’জনেই।
এদিকে বাংলায় এবার SIR-র খসড়া তালিকার নাম রয়েছে রুবার। ডোমিসাইল সার্টিফিকেটের জন্য সরকারি দফতরে যোগাযোগও করেছেন তিনি। ওই গৃহবধূর দাবি, রবিবার একটি অজানা নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্তে যিনি ছিলেন, তিনি নিজেকে জেলাশাসক দফতরের কর্মী বলে পরিচয় দেন। জানান, হিয়ারিংয়ের জন্য ওই গৃহবধূকে ডাকা হবে জেলাশাসকের দফতরে। এরপরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রুবা। হরিশচন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে দ্বারস্থ হন তিনি।
রুবা বলেন, ‘ফোন করে আমার পরিবার তথ্য জানতে চান এক ব্যক্তি। এরপর আমার SIR সংক্রান্ত সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন। কাগজপত্র নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে যেতে বলে’। স্থানীয় BLO মহম্মদ মাইনুল হক বলেন, ‘২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম থাকা বাবা-মায়ের তথ্য দিতে পারেননি, এমন ১১ জন রয়েছেন। খসড়া তালিকা তাঁদের নাম রয়েছে। কিন্তু হিয়ারিং নিয়ে ব্লক প্রশাসন খেকে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি’।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ এর বিডিও দপ্তর সূত্রে খবর, হিয়ারিং জন্য কাউকে ফোন করে ডাকা হবে না। নোটিশ পাঠানো হবে। নির্বাচন কমিশন এখনও হিয়ারিংয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। সেক্ষেত্রে ফোন করে কেউ আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করলে পুলিসে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কমিশন সূত্রে খবর, ২৩ ডিসেম্বর থেকেই SIR-র হিয়ারিং শুরু হচ্ছে। হিয়ারিংয়ের সময় যাতে কোনওভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি বা অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে DG ও DEO-দের চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক।
২০০২ ভোটার লিস্টে নাম নেই এরকম অনেকের নাম খসড়া তালিকায় আছে। অতিরিক্ত যাচাইয়ের জন্য তাদের অনেককেই কমিশন প্রয়োজনে ডাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেসক্রাইব ১৩ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। আবার ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের কারও নামই যদি না থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হিয়ারিংয়ের ডাকা হতে পারে। আধার ছাড়া বাকি ১২ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। তাহলেই নাম থাকবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায়। আবার ভুল তথ্য় দিলে বা বাবা-মায়ের বয়সের ব্যবধান ১৫ বছরের বেশি হলে কিংবা ভোটারের সঙ্গে অভিভাবকের বয়সের অযৌক্তিক গরমিলের (Logical discrepancy) মতো আর বেশ কয়েকটি হিয়ারিংয়ের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
