পার্থ চৌধুরী: বিহারের নাম্বার প্লেট দেওয়া ৫৫টি পুরনো বাইক এল বর্ধমানে বিজেপি জেলা পার্টি অফিসের ঠিকানায় এবং তা দাঁড়িয়ে থেকে বের করলেন বিজেপি নেতা। বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে এভাবে বাইক আনাকে ঘিরে শনিবার বর্ধমান রেল স্টেশনের ইস্টার্ন রেলওয়ের পার্সেল অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে নামে তৃণমূল কংগ্রেস।
অভিযোগ, বিহারের রাজেন্দ্রনগর থেকে প্রায় ৫৫টি বিহারের নম্বর প্লেটযুক্ত বাইক বর্ধমান জেলা বিজেপি পার্টি অফিসের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর পেয়েই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা পার্সেল অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। তাঁদের দাবি, বাইকগুলির সম্পূর্ণ নথি ও তথ্য প্রকাশ না করা পর্যন্ত কোনওভাবেই সেগুলি বাইরে বের করতে দেওয়া যাবে না। এতগুলি বাইক কীভাবে একসঙ্গে বিহার থেকে একটি ঠিকানায় এল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা।
তৃণমূলের আশঙ্কা, আজ বাইক ঢুকছে, আগামী দিনে এভাবেই রাজ্যে অপরাধী ঢোকানোর চেষ্টা হতে পারে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সুনীল গুপ্তা নামের এক ব্যক্তির নামে বিজেপি পার্টি অফিসের ঠিকানায় বাইকগুলি বুক করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ, বর্ধমানের বিজেপি নেতা খোকন সেন পার্সেল অফিসে উপস্থিত থেকে সেই বাইকগুলি বের করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন। তৃণমূলের দাবি, তাঁদের পৌঁছনোর আগেই কয়েকটি বাইক বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক খোকন দাস। তিনি বলেন, “রাজ্যে কী উদ্দেশ্যে এইভাবে বিহার থেকে বাইক ঢোকানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমরা চুপ থাকব না। ভোটের আগে বিজেপি বাইরে থেকে বাইকের মাধ্যমে ক্রিমিনাল এনে রাজ্যকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এরা তো এই বাইকগুলো দিয়ে অপরাধমূলক কাজকর্ম করে আবার চলে যাবে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরিকল্পিত অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই বাইকগুলি আনা হয়েছে। এই নিয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবার দাবিতেই তারা স্টেশন চত্বরে অবস্থানে বসেন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক খোকন দাস ছাড়াও দলের শহর সভাপতি তন্ময় সিংহ রায় সহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-উত্তপ্ত সৌদির পাহাড়ি এলাকা ঢাকছে পুরু তুষারে, সত্যি হতে চলেছে কি ‘সেই’ ভবিষ্যদ্বাণী?…
আরও পড়ুন-শাহবাগে সলতে পাকাচ্ছে কট্টররা! পদত্যাগের দাবি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার, এবার আঁচ লাগবে ইউনূসের গায়েও…
বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস এ আরও বলেন, ‘ বিহারে ওরা ভোট করেছে এইভাবে। আজ বাইক এসেছে। কাল গুন্ডা আসবে। তারা অশান্তি করে বিহারে চলে যাবে। ওদের নেতা খোকন সেন দায়িত্ব নিয়ে এগুলি দলের ছেলেদের বিলি করছেন। আমরা তাই এর প্রতিবাদ করছি।’ দলের শহর সভাপতি তন্ময় সিংহ রায় বলেন, ‘ এর প্রতিবাদে আমরা অবস্থান করছি। এর সম্পূর্ণ তথ্য রেল প্রশাসন এবং প্রশাসনকে দিতে হবে।’ শেষে বিধায়ক খোকন দাস আরপিএফ অফিসে গিয়ে রেল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি স্পষ্ট জানান, বিহার থেকে এতগুলি বাইক কীভাবে বর্ধমানে এল, তার তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কোনওভাবেই এখান থেকে বাইকগুলি বের করতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে, তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা দেবজ্যোতি সিংহরায় বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কিছুদিন আগে বিহারে ভোট হয়েছিল। সেই সময় সেখানে আমাদের কর্মীদের দলীয় কাজে ব্যবহারের জন্য বাইক দেওয়া হয়েছিল। এখন বিহারের ভোট শেষ হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ভোট আসছে, তাই বাইকগুলো এখানে আনা হয়েছে। বর্ধমানের জেলা পার্টি অফিস রাঢ়বঙ্গ জোনের অফিস হওয়ায় এখানকার ঠিকানাতেই সেগুলি পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক নির্বাচনের সময়ই এভাবেই বাইক আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল অহেতুক জলখোলা করার চেষ্টা করছে।”
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
