জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সদ্য় ভারতে ঘুরে গেলেন। দেশে ফিরেই দুঃসংবাদ পেলেন মেসি। ভয়াবদ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন এলএম টেনের বোন মারিয়া সোল। হাসপাতালে ভর্তি তিনি। নতুন বছরেই বিয়ে হওয়ার কথা। আপাতত স্থগিত বিয়ে।
জানা গিয়েছে, মায়ামির রাস্তায় নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন মারিয়া। হঠাত্ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে দেওয়ালে। গোড়ালি ও কব্জির হাড় ভেঙেছে। চোট লেগেছে মেরুদণ্ডেও। শরীরের কিছু অংশ নাকি পুড়েও গিয়েছে! কীভাবে দুর্ঘটনা? অনেক সংবাদমাধ্যমে দাবি, দুর্ঘটনার ঠিক আদে হঠাত্ অজ্ঞান হয়ে যান মেসির বোন। কারও কারও আবার মত, মোটরবাইকের সঙ্গে ধাক্কার কারণেই এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নিয়ে অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি বিয়ে হওয়ার কথা ছিল মারিয়া। পাত্র, জুলিয়ান আরেলানোর ইন্টার মায়ামির অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সহকারী কোচ। বিয়ের আসর বসার কথা ছিল আর্জেন্টিনার রোসারিও শহরে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিয়ে স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।
এদিকে যুবভারতীতে মেসিকাণ্ডে মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। গতকাল সোমবারই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রেখেছে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। শুনানিতে রাজ্য সরকার, আয়োজক শতদ্রু দত্ত এবং মামলাকারীদের আইনজীবীদের মধ্যে বাদানুবাদে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
যুবভারতীকাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত তথা অনুষ্ঠানের আয়োজক শতদ্রু দত্তের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না আদালতে দাবি করেন, আয়োজক হিসেবে মেসির মতো তারকাকে কলকাতায় নিয়ে আসার যে প্রতিশ্রুতি তাঁর মক্কেল দিয়েছিলেন, তা তিনি পালন করেছেন। শতদ্রু দত্তর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেসির এই সফর শুধু কলকাতায় নয়, হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং দিল্লিতেও হয়েছে এবং সেখানে কোনও বিশৃঙ্খলা হয়নি।
শতদ্রুর আইনজীবীর প্রধান যুক্তি ছিল, মাঠে অতিরিক্ত লোক প্রবেশের দায় আয়োজকদের নয়, বরং পুলিসের। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘আমার কাজ ছিল মেসিকে কলকাতায় নিয়ে আসা, আমি এনেছি। যুবভারতীর গেটে পুলিস মোতায়েন ছিল। পাস ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাদের। অতিরিক্ত লোক কী ভাবে মাঠে ঢুকল, সেই দায় কি আয়োজকের?’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, খোদ পুলিসকর্মীরাও ডিউটি ছেড়ে মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। এমন কি জলের বোতল মাঠে প্রবেশের ক্ষেত্রেও স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ও পুলিসের নজরদারির অভাবকে দায়ী করেন তিনি।
রাজ্য সরকারের পক্ষে বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন যে, এই অনুষ্ঠানের অব্যবস্থার জন্য সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে। তিনি জানান, ঘটনার গুরুত্ব বুঝে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ক্ষমা চেয়েছেন, যা নজিরবিহীন। প্রশাসনিক তৎপরতার প্রমাণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন যে, ঘটনার পরেই ডিজি রাজীব কুমার এবং সিপি মুকেশ কুমারকে শোকজ করা হয়েছে এবং ডিসিপি অনীশ সরকারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
রাজ্যের তরফে আরও দাবি করা হয় যে, আয়োজকরা পুলিসের কাছে সঠিক তথ্য দেয়নি। মেসিকে কেন্দ্রের তরফে ‘জেড ক্যাটেগরি’র নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল এবং এনএসজি কমান্ডোরা তাঁর দায়িত্বে ছিলেন। সিআইএসএফ এবং রাজ্য পুলিসের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল বলেও রাজ্য দাবি করে। টিকিটের টাকা ফেরতের প্রসঙ্গে রাজ্যের স্পষ্ট জবাব, ‘সরকার কোনো টিকিট বিক্রি করেনি, সবটাই করেছে আয়োজকরা। আমরা টাকা উদ্ধারের রিকভারি এজেন্ট নই।’
ঘটনাটি ঠিক কী? ভারত সফরে এসে প্রবল উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্যে কলকাতায়ও পা রেখেছিলেন মেসি। কিন্তু মাত্র ২০ মিনিট থেকেই যুবভারতী থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপরই ‘মাসিহা-মেসি’র এক ঝলকও না পেয়ে রীতিমতো ক্ষেপে ওঠেন দর্শকরা। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মাঠে ঢুকে পড়েন তাঁরা। শুরু হল ব্যাপক ভাঙচুর।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
