রাজ্য সরকারের প্রদত্ত সাম্মানিক দান করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে কয়েকটি কারণ। এই প্রসঙ্গে এই সময় ডিজিটালকে তিনি জানান, ”এতদিন মঞ্চে কাটানোর পর এই পুরস্কারটি আমার কাছে খুবই সম্মানের, কিন্তু এই সাম্মানিক অর্থটি আমার কাছে প্রয়োজনীয় নয়। আমার উচিত এই সম্মানের পরিবর্তে সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়া। কোভিড আমাদের শিখিয়ে গিয়েছে একা একা বাঁচা সম্ভব নয়। তাই ঋদ্ধি আর রেশমীর সঙ্গে কথা বলেই সাম্মানিকটি শিশুদের কিডনির চিকিৎসায় খরচ করার কথা ভেবেছি।”
এছাড়াও সাম্মানিকের অর্থ শিশুদের কিডনির চিকিৎসায় দেওয়ার পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে হারানোর যন্ত্রণাও। এই সময় ডিজিটালকে কৌশিক সেন বলেন, ”আমার বাবা কিডনি অসুখে মারা যান। আমি ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ-এ দেখেছি কত ছোট ছোট শিশুদের ডায়ালিসিস, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট, কিডনির চিকিৎসা চলছে। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম ওদের জন্য কিছু করার কথা সেখান থেকেই এই সিদ্ধান্ত।”
সরকার বিরোধী, বাম ঘেঁষা নাট্যকারের রাজ্য সরকার প্রদত্ত সাম্মানিক দানের পদক্ষেপের মধ্যে অনেকেই প্রতিবাদের স্বর খুঁজছেন। সে বিষয়ে অভিনেতাকে প্রশ্ন করতেই তিনি জল্পনা উড়িয়ে স্পষ্ট ভাষায় জানান, ”সরকারের কিছু নীতির আমি বিরোধী হলেও সব বিষয়ে প্রতিবাদ খুঁজতে যাবেন না। এতে কোনও প্রতিবাদের ব্যাপার নেই। তবে তৃণমূল কর্মীদের গুণ্ডামিতে যে দুজন নাট্যকার হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন। সে বিষয়টি নিয়ে খুব হইচইও হয়েছিল। আমি ঋদ্ধিও প্রতিবাদ করেছিলাম। তখনই ঠিক করেছিলাম এই সব গুণ্ডামির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সেই মানুষ দুজনের জন্য কিছু করব। স্বপ্নসন্ধানীর ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওদের সম্মানিত করেছি।”
একইসঙ্গে এই প্রসঙ্গে হ্যামলেট নাটকের নির্দেশক এবছরের পুরস্কারের একটি প্যাটার্ন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ”থিয়েটার হবে মুক্তমনা। এই মঞ্চে রাজনীতির বিষ যেন না ঢোকে। এবছর আমি গিরিশ পুরস্কার পেয়েছি, দীনবন্ধু পুরস্কার পেয়েছেন থিয়েটার ওয়ার্ক শপের অশোক মুখোপাধ্যায় ও শুভদীপ গুহ। লক্ষ্য করার মতো বিষয় আমরা তিন জনেই সরকার বিরোধী, বামঘেঁষা বলেই পরিচিত। এই ব্যাপারটা আমার খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আমার মনে হয়েছে হয়তো সরকার দেরি হলেও বুঝেছে এবার এই মোটা দাগের রাজনীতির থেকে এই সংস্কৃতির মঞ্চকে বাঁচানো উচিত।”