‘সবাই বলছে একটা তো কম্প্রোমাইজ করতেই হবে…’ অকপট অরুণিমা


সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: মুক্তির অপেক্ষায় ‘কীর্তন’। ছবিতে অন্যতম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অরুণিমা ঘোষ। ছবি মুক্তির আগে কেরিয়ার থেকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডায় অভিনেত্রী।

কেমন আছেন?

অরুণিমা: চলছে…গরমের মাঝে বৃষ্টি হলে মন ভালো হয়ে যায়। আগামী ছবির শ্যুটিং শুরু হবে ২৪-২৫ তারিখ থেকে। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

কীর্তন মুক্তির মুখে, এই চরিত্রটা কেন বাছলেন?

অরুণিমা: কীর্তনের এই চরিত্র মণিমালার জীবনে যে ক্রাইসিস সেটা আমাদের বয়সী সব মেয়েদেরই ক্রাইসিস। আমি নিজেও রিলেট করতে পারি কারণ আমরা সকলেই চাই, আমাদের সংসারটা যেন আমরা নিজহাতে গোছাতে পারি। মনের মতো ফ্ল্যাট হবে, লাভিং হাজবেন্ড হবে, সে যেন আমারই কন্ট্রোলে থাকে, মণিমালাও তাই চায়। মণিমালার মতো আমিও এদেশী। আমরা সত্যিই ডালেও চিনি দিয়ে খাই অন্যদিকে বাঙালরা সব ঝাল খায়। তো আমি এই চরিত্রটার সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পারি।

মানে অরুণিমা নিজেকে মণিমালার মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন?

অরুণিমা: অরুণিমা যদি বিয়ে করে মণিমালার সিচ্যুয়েশনে পড়ত তাহলে এইভাবেই রিয়্যাক্ট করত, শুধু এতো ঝগড়াটা করত না। আমি এত ঝগড়া করতে পারতাম না, অজ্ঞান হয়ে যেতাম (হাসি)। আমি উত্তর কলকাতায় বড় হয়েছি, এরকম অনেক চরিত্র দেখেছি।

আরও পড়ুন- Tollywood: ‘আইনি চুক্তি থাকলে তাকে প্রতারণা বলে না’, নায়কের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক পরিচালক পীযূষ সাহা

কীর্তন নাম কেন?

অরুণিমা: সকালবেলা থেকে মণিমালার বাড়িতে শ্বশুর বৌমার কীর্তন শুরু হয়ে যায় মানে সকাল থেকে রাত অবধি ঝগড়াকেই কীর্তন বলা হচ্ছে।

কীর্তন তো মুক্তি পাচ্ছে, তবে আপনাকে সেভাবে বেশি কাজ করতে দেখা যায় না। কেন?

অরুণিমা: ছোটবেলা থেকেই আমার একটা প্রবলেম আছে, আমি ভীষণ খুঁতখুঁতে। আমি অলরাউন্ডার নয়। আমি যদি একটা কাজ অনেক ভেবে একটু সময়ের গ্যাপ নিয়ে করি তাহলে ভালোভাবে করতে পারি। ঐ জন্যই আমি চরিত্রের মধ্যে ঢুকতে পারি। আমাকে সবাই এই প্রশ্নটা করে, আমি এবার ঠিক করেছি, এই বছর থেকে আমি একটু বেশি কাজ করব। আসলে কী হয়, কিছুদিন আগেই একটা ছবির অফার পেলাম। অনেকবার ভাবলাম কিন্তু চরিত্রটা আমায় নাড়া দিচ্ছে না। তাই সেই চরিত্রটা আমার না করাটাই ভালো। সেটার জাস্টিস হবে না। তাই বেছে বেছে কম কাজ করি। তবে কাছের মানুষরা বারংবার বলছে, তাই এবার বেশি কাজ করব বলেই ভেবেছি।

ছোটপর্দা থেকেই আপনার জনপ্রিয়তা, এখন কী ছোটপর্দার অফার এলে, করবেন?

অরুণিমা: আমি ছোটপর্দা থেকে শুরু করেছি। আমায় ছোটপর্দা অনেক কিছু দিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ছোটপর্দার কথা ভাবছি না। সিনেমায় ভালো ভালো চরিত্র পাচ্ছি। যখন আমি কেরিয়ার শুরু করি, তখন সিনেমা আলাদা ছিল, এখন অনেক গল্প পাচ্ছি, তাই বড়পর্দাতেই এখন কাজ করব। অবশ্যই ওটিটিতে কাজ করব। সবাই ওটিটি করে ফেলেছে, আমি সবে শুরু করলাম। এখন দুটো ওটিটি করেছি। আগামীতে সেখানেও বেছে বেছে চরিত্র করব। আশা করি ভালো লাগবে।

আরও পড়ুন- Baiju Bawra: জানেন, সঞ্জয় লীলা ভনসালী ২০ বছর ধরে কোন ছবিটি তৈরি করে চলেছেন?

ছোটপর্দার গল্পের কারণেই কী আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত?

অরুণিমা: আমি শুধু নয়, আমার জেনারেশনে যে মানের ধারাবাহিক, টেলিফিল্ম হয়েছে, আমি রবি ওঝার সঙ্গে কাজ করেছি, সেই ধরনের কাজ তো এখন হচ্ছে না। এখন যে কাজগুলো হচ্ছে নিশ্চয় দর্শক দেখতে পছন্দ করছে তাই হচ্ছে, তবে আমি এই মুহূর্তে ফিকশন করতে চাই না। টিভিতে নন ফিকশন হলে করতে পারি। তাছাড়া সিনেমার পাশে মেগা করতে হলে অনেক সময় দিতে হয়। আমি ওটা পারি না। তিন দিন কাজ করব, নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে কাজ করব। আমি একটু ওল্ড স্কুল।

আপনি কেরিয়ারের শুরুর কথা বলছিলেন, একটা বিষয় যা আমাদের অবাক করে তা হল আপনাকে বছরের পর বছর একই দেখতে, এটা কী করে সম্ভব?

অরুণিমা: না, না, এখন বেড়েছি। আগে ছটফটে ছিলাম এখন অনেক শান্ত। মুখ, চেহারাও বেড়েছে। কেন যে লোকে বুঝতে পারে না, তা জানি না। তবে এটা আমার বাবা-মায়ের থেকে পেয়েছি। ওঁদেরও বয়স এক জায়গায় আটকে। এটা ওদের থেকেই পেয়েছি।

এটা তো আশীর্বাদ…

অরুণিমা: আমি এক্সারসাইজও করি। তবে খাইও। পুজোর সময়, জন্মদিনেও খাই। মাঝে মাঝেই চারটে মিষ্টি খেয়ে নিই। গোটা কেক খেয়ে নিই। যখন খাই তখন লেভেলের খাই। একটা গোটা বিরিয়ানি ও একটা গোটা চাঁপ খেয়ে নিতে পারি। সব মিষ্টি তো খাই।

আরও পড়ুন- Choi Sung Bong: জনপ্রিয় কে-পপ গায়কের রহস্য মৃত্যু! হচ্ছেটা কী!

কেরিয়ার তো হল! এবার বিয়েটা কবে?

অরুণিমা: সবার একটাই প্রশ্ন। ডিস্কে নাচতে গিয়েও একজন প্রশ্ন করছে। যেদিন ছেলে পাব সেদিনই বিয়ে। আমি শুধু আমার পরিবারকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারব না। আমি বাড়িতে খুব বিরক্ত করি কিন্তু আমি হোম সিক। আমি একমাত্র মেয়ে, ওদের ছেড়ে থাকত পারব না। লং ডিসটেনশ রিলেশনশিপ টেকে না, কলকাতায় ছেলে পেলেই তিনদিনে বিয়ে।

ছেলে পাচ্ছেন না?

অরুণিমা: আমি এমনিতেই খুঁতখুঁতে, এত বেছে কাজ করি। পাত্রের ক্ষেত্রেও তাই। পাঁচজন এলেও একজনও পছন্দ হচ্ছে না। তবে সিরিয়াসলি একটা কথা মনে হয়, চারিদিকে ডিভোর্স এত বেড়ে যাচ্ছে কারণ একটা মানুষের সঙ্গে মনের মিল না হলে থাকাটা খুব সমস্যা। আমি এমন একজনকে চাই যে ভালো মানুষ। তাঁকে দয়ালু হতে হবে, জ্ঞানী হতে হবে, বড়দের সম্মান দেবে, দায়িত্ববান হবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ (হাসি) একটু তো ভালো দেখতে হবে। সব একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে না। বাবা-মা বলছে একটু তো কম্প্রোমাইজ করতেই হবে(হাসি)।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *