অশোকনগর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোমিনপুরের বাসিন্দা বছর ২৩-এর যুবক সঞ্জয় দে। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে তাঁর বেড়ে ওঠা। মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করার পর বিজ্ঞান বিষয়েই এগোনোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকেও সায়েন্সে ভালো ফলাফল করেন সঞ্জয়। এরপর পদার্থবিদ্যায় অনার্স কোর্সে ভর্তি হন।
বিজ্ঞানের প্রতি বরাবর ভালোবাসা ছিল তাঁর। দেশ বিদেশের বড় বড় রিসার্চ সেন্টারে সুযোগের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন সঞ্জয়। আর তাতেই মেলে সাফল্য। দেশের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও ডাক পেয়েছেন তিনি।
তাইওয়ানের চেং কুং ইউনিভার্সিটি থেকে ডাক পাওয়া সত্ত্বেও ফিরিয়ে দিয়েছেন এই মেধাবী। তাঁর লক্ষ্য দেশের জন্য কিছু করা এবং আপাতত বিদেশে পাড়ি না জমানো। বেঙ্গালুরুর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল সায়েন্সে উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ছেলের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত খুশি তাঁর বাবা-মা।
সঞ্জয়ের মা আভা দে বলেন, “আমার খুব আশা ছিল ছেলে মানুষের মতো মানুষ হোক। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়িয়েছি। ছেলে আমার বাধ্য। আগে বাড়ির সামনে হাঁটু জল ছিল। ওকে তার মধ্য দিয়ে স্কুলে নিয়ে যেতাম। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করি। রান্নার কাজ করতাম। রাতে আয়ার কাজ করতাম এবং দোকানও সামলাতাম। বিদেশেও ও পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছিল। ওর ইচ্ছে দেশের হয়ে কাজ করা। ওর এই সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত খুশি।।”
সঞ্জয় দে বলেন, “পিএইচডি করার জন্য বিদেশ থেকে ডাক পেয়েছিলাম। তাইওয়ান থেকে সুযোগ আসে। কিন্তু, বিদেশে চলে গেলে সেখানেই বেশিরভাগ সময় থেকে যেতে হয়। আমি তা চাই না। ‘ফিজিক্স অফ লাইভ’ ছিল আমার বিষয়। এতদিন বায়োলজি নিয়ে যাঁরা বিশেষজ্ঞ তাঁরাই এই নিয়ে গবেষণা করতেন।”
বাংলা মাধ্যম স্কুলেই পড়াশোনা সঞ্জয়ের। অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলেই তাঁর পড়াশোনা। আগামীদিনে সফলভাবে পিএইচডি করাই সঞ্জয়ের লক্ষ্য। তিনি জানান, দেশে থেকেই কেরিয়ার গড়তে চান তিনি। দেশের বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশি প্রতিযোগিতা, এমনটাই জানান সঞ্জয়।