অস্ত্রোপচারের পর পুরুষ থেকে নারী হয়ে ওঠা সোহানির লড়াই বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই। যাঁরা নিজেদের ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করেন, তাঁরা তো বটেই, এমনকী স্থানীয় বৃহন্নলারাও নিয়মিত ফোনে হুমকি দেওয়া এবং নানা মানসিক অত্যাচার শুরু করেছিল বলে পরিচিত মহলে বারবার জানিয়েছিলেন সোহানি। এয়ারপোর্ট ১ নম্বর গেটের কাছে গুরুতর অসুস্থ মা এবং বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে থাকতেন তিনি। লিঙ্গ পরিবর্তনের পর অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রান্স জেন্ডার/হিজড়া ইন বেঙ্গলের সচিব রঞ্জিতা সিনহার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে তাঁর। রঞ্জিতা গত তিন দশক ধরে রাজ্যে রূপান্তরকামী ও হিজড়াদের অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছেন। গোখেল রোডে রঞ্জিতার বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া শুরু করেন সোহানি।
রঞ্জিতা বলছেন, ‘আমাদের কাছে সমাজে টিকে থাকার লড়াই এমনিতেই খুব কঠিন। পরিবার, সমাজ – কারও থেকেই কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। সোহানিরও তাই হয়েছিল। কিন্তু এত কিছুর পরেও সে যথেষ্ট হাসিখুশি থাকত। একটি নামী হোটেলে তার চাকরির ব্যবস্থা পাকা হয়ে গিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতেই আমাদের কাছে ওর আত্মহত্যার খবর আসে।’
রঞ্জিতা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে সোহানি তাঁর বাড়িতে আসা এবং ফোন করা বন্ধ করে দেওয়ায় একদিন তিনি নিজে থেকে সোহানিকে ফোন করেন। সোহানির বয়ফ্রেন্ড ফোন ধরে তাঁর মৃত্যুসংবাদ শোনায়। রঞ্জিতার দাবি, ‘সোহানি আত্মহত্যা করতে পারে না। নিশ্চই তার সঙ্গে এমন কোনও আচরণ করা হয়েছে যার ফলে সে বাধ্য হয়েছে এই চরম পথ বেছে নিতে।’ বিষয়টাকে এখানেই ছেড়ে দিতে চাইছে না অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রান্স জেন্ডার/হিজড়া ইন বেঙ্গল। এই সপ্তাহেই আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে সোহানির অস্বাভাবিক মৃত্যুর নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন। তাঁদের দাবি মানসিক নিপীড়ন যদি হয়, তাহলে সেটা এক ধরনের র্যাগিং।