Young Teacher : গ্রামের কচিকাঁচাদের দায়িত্বে খুদে মাস্টার, শিক্ষার আলো জ্বালাচ্ছে ‘সৌরভ মামা’র পাঠশালা – young teacher sourav byadh running school for village children at taldangra bankura


Teachers Day : সে নিজেই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সে নিজে এক ছাত্র, আবার শিক্ষকও বটে। এইটুকু বয়সেই গ্রামের খুদে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করানোর দায়িত্ব তুলে নিয়েছে নিজের কাঁধে। বাঁকুড়ার তালডাংরায় প্রান্তিক দুঃস্থ ছেলে-মেয়েগুলোর জন্য আলোর পথ দেখাচ্ছে তাঁদের ‘সৌরভ মামা’।

Shiksha Ratna Award : পড়ুয়াদের ভবিষ্যত গড়তে অনন্য অবদান, ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কার পাচ্ছেন বাঁকুড়ার দুই শিক্ষক
অল্প বয়সেই শিক্ষকের দায়িত্ব

যে বয়সে ছেলে মেয়েরা মাঠে ঘাটে খেলাধূলা করে বেড়ায়, সেই বয়সে এই সৌরভ ছোটো ছোটো ভাই বোনদের পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছে। পড়ুয়ারাও ভীষণ ভালোবাসেন তাদের সৌরভ স্যারকে, থুড়ি সৌরভ মামাকে।

Teacher’s Day Wishes in Bengali : শিক্ষক দিবসে শৈশবের স্মৃতি, প্রিয় স্যারদের ফেসবুকে পৌঁছে যাক এই বার্তা…
কে এই সৌরভ?

আজকের এই ক্ষুদে শিক্ষকের পুরো নাম সৌরভ ব্যাধ। সে এখনও পর্যন্ত যাযাবর সম্প্রদায়ের প্রথম প্রজন্মের সদস্য। যে প্রাথমিকের গণ্ডি ছাড়িয়ে হাই স্কুলে পা রেখেছে। তালডাংরার শতাব্দী প্রাচীন হাড়মাসড়া হাই স্কুলের ক্লাস সৌরভ নামের এই ছাত্রই এখন শিক্ষকের ভূমিকায়। এখনও পর্যন্ত সে নিজে যা শিখেছে, তা নিজের মতো করেই শেখানোর চেষ্টা করছে তাদের যাযাবর সম্প্রদায়ের ছোটো ছোটো ভাই বোনগুলোকে।

Teachers’ Day 2023: ভারতে কেন 5 সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন হয়? জানুন নেপথ্যের ইতিহাস সহ দিনটির তাৎপর্য্য
স্কুল চালায় সৌরভ

প্রতিদিন সকাল আর বিকেলে হাড়মাসড়া সংলগ্ন জেমুয়া যাযাবর কলোনিতে খোলা আকাশের নিচে গাছের তলায় চলে সৌরভের স্কুল। সেখানে ‘অ এ অজগরটি আসছে তেড়ে…’থেকে ‘একে চন্দ্র, দুই এ পক্ষ’ সবই শিখছে ওখানকার শিশুরা। প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ার তালডাংরার হাড়মাসড়ার জেমুয়া যাযাবর কলোনীতে ৭ টি পরিবারের প্রায় ৪০ জন সদস্য বসবাস করেন। স্থায়ী রোজগারের সেভাবে কোন সুযোগ না থাকায় এক প্রকার অর্থাভাবেই দিন কাটে তাদের। অর্থ যেখানে ভাবায় সেখানে শিক্ষাগ্রহণ যেন বিলাসিতা! কিন্তু এসবকে মিথ্যা প্রমাণ করে এই এলাকায় যাযাবর সম্প্রদায়ের প্রথম প্রজন্ম সৌরভ যে হাই স্কুল পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে। কিন্তু এখানেই থেমে থাকা নয়, সে চায় তার মতো পাড়ার অন্যান্যরাও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক।

কী বলল সৌরভ?

খুদে শিক্ষক সৌরভের কথায়, আগে আমাদের কেউই স্কুল যাওয়ার কথা ভাবেনি, সুযোগও ছিলনা। এখন আমি নিজে হাড়মাসড়া হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। এছাড়া পাড়ার ভাই বোন গুলোরও অক্ষর পরিচয় করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছি। তবে বর্তমানে বিষ্ণুপুরের ‘কাজি বাবু’ এই কাজে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন বলে সে জানায়।

Birbhum News : পড়া করোনি কেন? ছাত্রীকে শাসন করে বেধড়ক মার খেলেন শিক্ষক!

খুশি গ্রামের খুদে পড়ুয়ারা

‘সৌরভ মামা’কে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে বেজায় খুশি বিশ্বরুপ, কল্পনা ব্যাধরা। তাঁদের কথায় সৌরভ মামা প্রতিদিন দু’বেলা আমাদের পড়ায়। পড়াশোনা করতে বেশ ভালোই লাগে বলে এই যাযাবর শিশুরা জানিয়েছে। ছেলের এই কর্মকাণ্ডে গর্বিত মা পিঙ্কু ব্যাধ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজে আগে কেউই স্কুলে যেতো না, আমিই উদ্যোগ নিয়ে আমার ছেলে মেয়েকে প্রথমে স্কুলে ভর্তি করি।’ এখন অনেকেই যাচ্ছে, আর তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে ছেলে সৌরভ। একজন মা হিসেবে এই ঘটনায় তিনি গর্বিত বলেই জানান।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *