কী ভাবে জালিয়াতি?
জানা গিয়েছে, কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশ এর শালবনি এলাকায় শালবনি পেট্রোল পাম্পের কাছে প্রায় ৫ বিঘা জমি রয়েছে । ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশ এর ২০০৬ সালে তার মৃত্যু হয়েছে । তার জমিটি অবহেলায় পড়েছিল শালবনি পেট্রোল পাম্পের পাশে । জমিটির মালিকের অনেকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে সেই বিষয়টি জানতে পারে এলাকায় তৃণমূলের নেতা নামে পরিচিত জ্যোতির্ময় মাহাতো । তারপরেই চলতি বছরের মার্চ মাসে এক ব্যক্তিকে ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশ সাজিয়ে ঝাড়গ্রামের জমি রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জমিটি তার নামে করে নেয় । জমি রেজিস্টেশনের পর জমিটির মিউটেশন করার সময় ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশ এর বাড়িতে নোটিশ যায় । তারপরেই বিষয়টি জানতে পারে ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশ এর পরিবারের লোকজন ।
জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য
ভূপেন্দ্রনাথ মহালনবীশের মেয়ে অনিতা আটবানি ঝাড়গ্রামের জমি রেজিস্ট্রি অফিসে লিখিত অভিযোগ জানায় । অভিযোগ জানানোর পরেই জেলা রেজিস্ট্রি অফিসার উভয়পক্ষকে ডেকে পাঠায় । গতকাল মঙ্গলবার উভয় পক্ষ হাজির হয় জমি রেজিস্ট্রি অফিসে । জ্যোতির্ময় মাহাতো সঠিক তথ্য প্রমাণ না দেখাতে পারায় তার জালিয়াতি ধরে ফেলে জেলা রেজিস্ট্রি অফিসার ।
পুলিশে দায়ের অভিযোগ
জেলা রেজিস্ট্রি অফিসারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে লোধাশুলী গ্রাম পঞ্চায়েতের দহতমূল গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতির্ময় মাহাতোকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ । জ্যোতির্ময় মাহাতোর বিরুদ্ধে ৪২০ ,৪৬৭ ,৪৭১,৪৭২ ,১২০ (বি)ধারায় মামলার রুজু করে বুধবার ঝাড়গ্রামের সিজেএম আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন ।
কে এই জ্যোতির্ময়?
জানা গিয়েছে, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ নাম্বার আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিল জ্যোতির্ময় । কিন্তু জ্যোতির্ময় কুড়মি সমাজের কাছে ভোটে হেরে যায় । ঝাড়গ্রাম ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নরেন মাহাতো বলেন, ‘এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নতুন মুখ কে প্রার্থী করা হয়েছিল । তাই আমরাও জ্যোতির্ময় মাহাতোকে ১৩ নম্বর আসনে প্রার্থী করেছিলাম। কুড়মি সমাজের কাছে ভোটে হেরে যায় জ্যোতির্ময় । তারপর থেকেই দলের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই।’ ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্য সুন্দর ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ যুক্ত আছে কিনা বা বড় কোন চক্র রয়েছে তা খতিয়ে রাখা হচ্ছে ।’