একাধিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলছেন, ‘শিক্ষক নিয়োগের এই বাছাই কমিটির বিষয়ে আলোচনা করতে সাম্প্রতিক অতীতে তাঁদের সঙ্গে আচার্য-রাজ্যপালের কোনও বৈঠক হয়নি। ফলে এ ব্যাপারে ভালো করে না জেনে মন্তব্য করা যুক্তিসঙ্গত নয়।’ এমনকী রাজভবনের হোয়াটস অ্যাপ বার্তা সংশ্লিষ্ট উপাচার্যদের পাঠানোর পরেও তা বুঝতে না পারায় এ ব্যাপারে ধন্দ আরও বেড়েছে। দুই অভিজ্ঞ অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানান, শিক্ষক নিয়োগের সিলেকশন কমিটি রাজ্যপাল-আচার্য গঠন করেন না।
বরং এই ক্ষেত্রে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হবে, সংশ্লিষ্ট উপাচার্যর প্রতিনিধিই সেই কমিটির চেয়ারম্যান হন। আচার্যর একজন প্রতিনিধি থাকেন। বাকিরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগ থেকে এই সব বিশেষজ্ঞদের নাম চাওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধিত) আইন ২০১৭ সাল কার্যকরের আগে পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাই পদাধিকার বলে শিক্ষক নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু আইন সংশোধনের পরে উপাচার্যই নিয়োগ কর্তা বলে তিনি আর কমিটিতে থাকতে পারেন না।
অন্তর্বর্তী এক উপাচার্য রাজভবনের বিবৃতি দেখে পাল্টা জানতে চান, রাজ্যপাল কি শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়ে কোনও কমিটি গঠন করেছেন? রাজভবন ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষাবিদ অবশ্য জানাচ্ছেন, এ রকম একতরফা ভাবে কোনও টিচার্স সিলেকশন কমিটি গঠনের অধিকার বা ক্ষমতা রাজ্যপাল-আচার্যর নেই। এটা একেবারেই আইন বহির্ভূত কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিধিতেও এ রকম কোনও সুপারিশ নেই। ফলে বিষয়টি একেবারেই আইন সিদ্ধ নয়। এখন এই বার্তা নিয়ে কোনও ধন্দ বা সংশয় হলে, তা নিরসনের দায়িত্ব নিতে হবে রাজভবনকে।
অবশ্য রাজ্য-রাজ্যপাল দু’পক্ষের কাছের লোকজনই এখন ১৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে। তাঁদের আশা, দেশের সর্বোচ্চ আদালতই শেষ পর্যন্ত দিশা দেখাবে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে দ্রুত সার্চ কমিটি গঠনই সমাধানের একমাত্র রাস্তা। এ ছাড়া বিকল্প কোনও পথ নেই।