কী জানা যাচ্ছে?
কোলাঘাটের যুবক প্রলয় ঘোষ সাপ অন্ত প্রাণ। প্রলয়ের বাড়ি কোলাঘাট থানার আঁড়র গ্রামে। কোথাও সাপ বেরিয়েছে জানতে পারলে সব কাজ ছেড়ে সাপ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে সাইকেল চালিয়ে সেখানে হাজির হয় প্রলয়। বহু সচেতনশীল মানুষ আবার বাড়িতে বা আশেপাশে বিষধর সাপ বের হলে প্রলয়কে ডেকে নিয়ে যায়। এলাকায় প্রলয় ‘স্নেক ম্যান’ নামে পরিচিত।
কীভাবে সাপ ধরায় পারদর্শিতা?
প্রলয় কৈশর বেলা থেকেই সর্প প্রেমিক। ওর কথায় এই পৃথিবীটা কেবল মানুষের জন্য নয়। জীব জগতের সবাই সবার উপর নির্ভরশীল। সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে। সাপ নিরীহ প্রাণী। সাপ আক্রান্ত না হলে আক্রমণ করে না। প্রলয় সাপুড়েদের দেখে এবং নেটে এই বিষয়ক ইউটিউব দেখে সাপ ধরায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে।
কোলাঘাটের আশপাশের গ্রামে কোথাও মাছ শিকারী মুগরি থেকে, কারো খড়ের গাদা, জঞ্জালের স্তুপ থেকে, কাদেরও আবার বাড়ির ভেতরে থেকে সাপ উদ্ধার করে চলেছে প্রলয়। গত দুমাসেই প্রায় সতেরোটি বিষধর এবং লুপ্তপ্রায় প্রজাতির সাপ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। তবে প্রথমেই বনদফতরে খবর দেয়। ওর কথায়, ওনারা কখনোই সময় মত আসেননা। দু চারদিন পর্যন্ত প্রলয় ওই সাপগুলো বাড়িতেই প্লাস্টিক জারে ভরে যত্ন করে রেখে দেয়। বনদফতরে কর্মীরা এলে তাঁদের হাতে সাপগুলো তুলে দেন।
কী কী সাপ উদ্ধার?
আজ ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে গত এক সপ্তাহে ছয়টি সাপ উদ্ধার করেছে। এরমধ্যে আছে প্রায় ছয় ফুটের বিষে টায়টম্বুর তেঁতুলে খরিষ, গোখরো, চন্দ্রবোড়া, কেলে, খরিষের মত বেশ বড়মাপের বয়স্ক এবং ছোট সাপ। অনেক আহত সাপকে প্রলয় পরিচর্চায় সুস্থ করে বনদফতরে হাতে তুলে দিয়েছে সে। দিন আনে দিন খায় যুবকটি স্বেচ্ছায় শুধু সাপকে ভালোবেসেই বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এই জীবসেবা করে চলেছে।
কী জানাল প্রলয়?
প্রলয়ের কথায়, ‘বিষধর সাপ দেখলেই কিছু মানুষ মেরে ফেলতে উদ্ধত হয়। খুবই দুঃখজনক। কোলাঘাট নতুন বাজারের একটি ক্লাব থেকে আমাকে সাপ ধরার লাঠি বা স্নেক স্টিকার সহ কিছু সরঞ্জাম কিনে দিয়েছি, বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে। এরজন্য আমি ওই ক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। মানুষের কাছে অনুরোধ আপনারা সাপ বের হলে মারবেন না। বনদফতরের হাতে তুলে দিন।