রাগকে ভারতী সংগীতের আত্মা বলা হয়। রাগই হল আধ্যাত্মিক এবং ইন্দ্রিয়গত দেবত্বের বহমানতা। রাগ দেবত্বের অনুভূতি নিয়ে বিস্তার লাভ করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ভারতীয় সঙ্গীতের উৎপত্তি সেই সময় যখন বেদ রচিত হয়েছিল। ভারতীয় প্রাচীন রাগগুলির সর্বশ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণা হল পুরুষ ও প্রকৃতি। পুরুষ আত্মা ও বিশুদ্ধ চেতনার প্রতীক। পুরষ শব্দের অর্থ মানুষ আর প্রকৃতি হল নারীর মাতৃরূপ। প্রকৃতি আক্ষরিক অর্থেই সৃষ্টিদাত্রী।
পুজো উদ্যোক্তাদের মতে সাম বেদে দেবাদিদেবকে সংগীত ও প্রাচীন রাগগুলির জনক বলা হয়েছে। আরও অন্যান্য পৌরাণিক ব্যাখ্যা বলে যে, পুরুষ ও প্রকৃতির ঐশ্বরিক মিলন জন্ম হয়েছে সঙ্গীতের। মনে করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে সংগীত এবং স্থাপত্য একটি মহাজাগতিক সংযোগের দ্বারা নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়েছে। সংগীত ও স্থাপত্য যখন একটি সরলীকৃত আকারে মিলিত হয় তখন তা মানুষের ভাবাবেগকে এক পরম উপলব্ধিতে উন্নীত করতে পারে সংগীত রূপে। আর সংগীতের এই আদি পর্যায় কে তুলে ধরেই, রাগ এবং স্থাপত্যের এই মহাজাগতিক সংযোগ ঘটাতে চলেছে সল্টলেকের এজি ব্লকের পুজো উদ্যোক্তারা।
এজি ব্লকের পুজোয় এখন তুঙ্গে ব্যস্ততা। হোগলা পাতা, মাটির কলসি, খেজুর গাছের ছাল, পেঁপে গাছের ছাল, বাঁশের চোচ ইত্যাদি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় আস্তে আস্তে ফুটে উঠছে এক আদি ইতিহাস। তার মধ্যে দিয়েই উপস্থাপিত করা হবে হিমায়িত সংগীতের স্থাপত্য।
উদ্যোক্তাদের আশা এ বছরে তাদের এই ভাবনা ছুঁয়ে যাবে দর্শকদের হৃদয়। যা স্পর্শ করবে অনুভূতিকে। মাতৃ মূর্তিতেও থাকবে বিশেষ চমক। এবছর এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছে ক্লাবের মহিলা সদস্যরা। মহিলা পুরোহিত দ্বারাই পূজিত হবে মা দুর্গা। থাকবেন মহিলা ঢাকি। শিল্পী সুমি মজুমদার ও তাঁর স্বামীর সূক্ষ্ম হাতের কারুকার্যে এখন ফুটে উঠছে অনবদ্যই সৃষ্টি। উদ্যোক্তাদের আশা মহালয়ার আগেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে গোটা মন্ডপ সজ্জা। ফলে এবছর এই পুজোকে ঘিরে বাড়তি আকর্ষণ থাকবে মানুষের বলেই মনে করা হচ্ছে।