গত ১২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে একটি মামলা উঠেছিল। আর এই মামলার প্রেক্ষিতেই আদালত এই মন্তব্য করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “স্বামীর মানসিকতা এখন স্পষ্ট। তাঁর অনুমতি ব্যতিত কোনও সিদ্ধান্ত স্ত্রী জীবনে না নিক তিনি চান না। এই ধরনের মানসিকতা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। এক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে দুই পক্ষই শিক্ষিত। স্ত্রী যদি নিজের নামে থাকা সম্পত্তি স্বামীর অনুমতি ছাড়া বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন সেক্ষেত্রে তা কোনওমতেই ‘নিষ্ঠুরতা’ বলে বিবেচিত হবে না।”
জানা গিয়েছে, ওই যুগলের বিয়ে হয়েছিল ২০০৫ সালে। তাঁদের বিয়ের ১৫ বছর পর স্ত্রী দুর্গাপুরের একটি সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এই সম্পত্তিটি স্বামী স্ত্রীকে কিনে দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি সম্পত্তিটি কেনার জন্য স্বামী টাকাও দিয়ে থাকেন তাতেও এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয় না যে স্ত্রীর নামেই তা রয়েছে। তাই স্বামীকে না জানিয়ে এই সম্পত্তি বিক্রি কোনওভাবেই ‘নিষ্ঠুরতা’ বলে বিবেচিত হবে না।
এর আগে স্বামী আদালতে জানিয়েছিলেন, তিনি ২০০৬ সালে অপর এক মহিলাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী একজন গৃহবধূ ছিলেন। তাঁর কোনও আয় ছিল না। তিনি সম্পর্ক উন্নত করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, স্বামী তাঁর প্রাক্তনের খরচ এবং তাঁর মেয়ের যাবতীয় পড়ার খরচ দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এটা মনে করা ভুল হবে না যে বর্তমানের আবেদনকারীর সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি অপর মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য।” লিঙ্গ বৈষম্যের মানসিকতা দূর করতে হবে, এই বার্তা দীর্ঘদিন ধরে দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভারতের সংবিধানে নারী এবং পুরুষের ক্ষমতা সম্পর্কিত বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। নারীদের বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী কী সুরক্ষা রয়েছে সেই বিষয়টিও স্পষ্ট। সার্বিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আদালতের এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।