বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিনিয়র’ পড়ুয়ারা একাধিক অজুহাতে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য হস্টেলের ঘর খালি করতে অস্বীকার করছেন। আর এই নিয়েই নয়া সমস্যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার সিনিয়র পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, তাঁর না সরিয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য নতুন হস্টেল তৈরি করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠক চলকালীন এই নিয়ে তাঁরা বুধবার ২ নম্বর ঘরের সামনে সন্ধে অবধি বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।
সিনিয়র পড়ুয়াদের সরিয়ে নতুনদের হস্টেলে স্থান দিতে ৩০ সেপ্টেম্বর অবধি সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে তা বাড়িয়ে ১০ অক্টোবর অবধি করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে এই কাজ করা এখন আরও বেশি কঠিন। কারণ এই নিয়ে পড়ুয়া বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
সোমনাথ সাহা নামে আন্দোলনকারী এক পড়ুয়া এ প্রসঙ্গে একটি ইংরেজি দৈনিককে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে ন্যাশনাল ইনস্ট্রমেন্ট লিমিটেড ক্যাম্পাসে নবাগত পড়ুয়াদের জন্য নতুন হস্টেল তৈরি করতেই পারে। তবে বর্তমান হস্টেলে থাকা পড়ুয়াদের কাউকে হস্টেল থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে না।’
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা UGC-র গাইডলাইন মেনে যাদবপুর কর্তৃপক্ষ স্টাফ কোয়াটার ব্লক এবং নিউ ব্লক হস্টেলে নবাগত পড়ুয়াদের পৃথক বন্দোবস্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর পর ফ্রেশারদের জন্য পৃথক হস্টেলের দাবি আরও জোরাল হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনার পর ৩০ জন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে ১০ অগাস্ট নিউ বয়েজ হস্টেলে স্থানান্তরিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ৯ অগাস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বারন্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। সেই মৃত্যু খুন না আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা, এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে ওই পড়ুয়াকে র্যাগিং করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় প্রাক্তনী ও পড়ুয়া মিলে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একজন জামিন পেলেও বাকিরা এখনও জেল হেফাজতে রয়েছেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারার পাশাপাশি পকসো আইনেও মামলা রুজু করা হয়েছে। আগামী দিনে এই তদন্ত কোন দিকে যায়, সেটাই দেখার।