মঙ্গলবার রাতে আইআইটি খড়গপুরের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলে নিজের রুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কিরণকে। দ্রুত আইআইটি ক্যাম্পাসের বি সি রায় টেকনোলজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তেলঙ্গানার মেদাক জেলার তুপ্রাণ গ্রামের এই মেধাবী ছাত্র। বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে।
বুধবার দুপুর নাগাদ আইআইটি খড়্গপুরে পৌঁছন কিরণের বাবা চন্দ্র-সহ অন্যান্য পরিজনেরা। এরপর বিকেল ৩টে নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রীতিমত ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন তাঁরা। মৃত পড়ুয়ার বাবা ও কাকা বলেন, ‘আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষের তরফে কেউই আমাদের সামনে আসেননি! তাঁরা কিছুই বলছেন না।’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘আমরা ছেলেকে পড়াশোনা করতেই পাঠিয়েছিলাম। ওর দাদাও আইআইটি খড়্গপুরেই পড়ে। মঙ্গলবার ঘটনার আগেও কিরণের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। বলছিল একটা প্রজেক্টের কাজ নিয়ে খুব চাপে আছে। মনে হচ্ছে বিভাগের কোনও প্রফেসর চাপ দেওয়ায়, সহ্য করতে না পেরে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’ তাঁরা বলেন, ‘এত বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওর মানসিক অবস্থা আগেই বোঝা উচিত ছিল। আমাদের সঙ্গে এই নিয়ে আগে থেকে কথা বললে হয়তো এমনটা হত না।’ তবে, খুন বা র্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ করেননি তাঁরা।
এদিকে এই বিষয়ে আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে বুধবার দুপুর নাগাদ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ কিরণের অপর দুই রুমমেট নিজেদের পড়াশোনার কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। তাঁরা সাড়ে ৮টা নাগাদ ফিরে দেখতে পান, রুম ভেতর থেকে বন্ধ করা। এরপর ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায়, দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়। দরজা খুলেই সকলে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এরপর দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় আইআইটি খড়্গপুরের হাসপাতালে। সেখানেই রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।