Leopard Attack : ডুয়ার্সে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা চিতাবাঘকে – a leopard body found at dooars forest


এই সময়, আলিপুরদুয়ার: সন্দেহ দানা বেঁধেছিল, রবিবার সাতসকালে লেপার্ডের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই। বছর দেড়েকের পুরুষ লেপার্ডটির অস্বাভাবিক মৃত্যু কোনও শারীরিক সমস্যার কারণে হয়েছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল বনকর্তাদের মনে। আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর দলগাঁও বনবস্তি এলাকার একটি ধানখেতের পাশে পড়েছিল লেপার্ডটির দেহ।

ঠিক ওই এলাকাতেই মাস দেড়েক ধরে লেপার্ডের হানায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এলাকাবাসী। দিনের শেষে ময়নাতদন্তের পর মিলে গেল বনকর্তাদের অনুমান। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেল, গলায় ফাঁস দিয়ে মারা হয়েছে লেপার্ডটিকে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ ছড়ায় বন দফতরের অন্দরে।

চা-বাগান লাগোয়া ওই এলাকাতেই লেপার্ডের হানায় মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধা ও দুই নাবালকের। ভরসন্ধেয় উঠোন থেকে শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়েছে চিতাবাঘ। এলাকায় আতঙ্ক যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জনরোষও। তাই এ দিন লেপার্ডের মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই প্রাথমিক অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছিল যে, তবে কি তিতিবিরক্ত হয়ে প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটা শুরু করল মানুষ? ফের কি নতুন করে শুরু হলো লেপার্ড-মানুষের সংঘাত?

প্রাথমিক ভাবে আলোচনায় উঠে আসে, বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর তত্ত্ব। কিন্তু দিনের শেষে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, সদ্য মায়ের দুধ ছাড়া ওই লেপার্ডটিকে রীতিমতো পরিকল্পনা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়াও চিতাবাঘটির হৃদযন্ত্রে কৃমি জমে যাওয়ায়, সে বেশ দুর্বলই ছিল। তাই সহজ শিকার মেলার আশায় সে লোকালয়ের আশেপাশেই ডেরা বেঁধেছিল।

উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘সমস্ত ঘটনার কার্যকারণ বিশ্লেষণ করে আমাদের অনুমান, লেপার্ডটিকে অন্যত্র গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে, পরে খেতের ওই নির্দিষ্ট জায়গায় এনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কারণ ময়নাতদন্তে গলায় ফাঁসের চিহ্ন মিলেছে। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে কোনও ফাঁদ অথবা দড়ি মেলেনি, যার সাহায্যে বন্যপ্রাণীটিকে হত্যা করা হয়েছে।’

Leopard Attack : চিতাবাঘের হানা ঠেকাতে রেডিয়ো কলারের ভাবনা বন দফতরের
ইতিপূর্বে, ২০১৮ সালে জেলার মাদারিহাট ব্লকের হান্টাপাড়া, ধুমচিপাড়া, গ্যারগেন্ডা ও রামঝোরা চা-বাগান এলাকায় লেপার্ডের হানায় তিন নাবালকের মৃত্যুর পর, মানুষের রোষে দু’টি লেপার্ডের মৃত্যু হয়েছিল। ঠিক ওই ঘটনার পাঁচ বছরের মাথায় উত্তর দলগাঁও বনবস্তি এলাকায় লেপার্ড হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো চিন্তিত বনকর্তারা।

রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘২০১৮ সালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবারও আমাদের মনে আশঙ্কা দানা বাঁধছিল। আমরাও সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেছিলাম। তবুও জনরোষের হাত থেকে অসহায় চিতাবাঘটিকে রক্ষা গেল না, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’ ময়নাতদন্তের পর ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের সুনির্দিষ্ট ধারায় লেপার্ড হত্যায় এফআইআর করেছে বন দফতর। যদিও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হয়নি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *