Durgapur Railway Station: মূত্রের ঝাঁঝালো গন্ধে নাভিশ্বাস দুর্গাপুর স্টেশন চত্বরে, রেলের কাছে পদক্ষেপের আবেদনেও অমিল সমাধান – durgapur railway station locals placing demand for free urinal as people are urinating in open place


দুর্গাপুর বাজারের ব্যস্ততম রাস্তার ওপর উন্মুক্ত স্থানে মূত্রত্যাগের সমস্যায় বিব্রত এলাকাবাসী। মানসম্মানের তোয়াক্কা না করেই অনবরত মূত্র ত্যাগ করে পরিবেশ দূষণ বাড়িয়ে চলেছে পুরুষেরা। ওই মূত্র বয়ে চলেছে পিচ রাস্তার ওপর দিয়ে। তার ওপর দিয়েই হেঁটে চলেছেন পথচারীরা। মূত্রের তীব্র ঝাঁঝালো দুর্গন্ধ ও মূত্র ত্যাগের দৃষ্টিকটু দৃশ্যে নাজেহাল অবস্থা পথচারী থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। লজ্জায় ও দুর্গন্ধে নাক-মুখ ঢেকে রাস্তায় চলাচল করছেন মা-বোনেরা। এমনই নরকযন্ত্রণা ভোগ করছেন দুর্গাপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন বাজার এলাকার মানুষ। অভিযোগ, বাজার ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। আর এই সভ্য সমাজে কিছু কাণ্ডজ্ঞানহীন ও বিবেকহীন মানুষেরা শতাধিক মানুষের মাঝেই একই অসামাজিক কর্মকাণ্ড করে চলেছেন প্রতিনিয়ত বলে অভিযোগ।

এই দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে নাভিশ্বাস এলাকাবাসী। অভিযোগ, বাজার ও দুর্গাপুর রেলস্টেশন চত্বরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। জনবহুল এলাকায় মূত্রত্যাগীদের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। বাজার কমিটি ও অটো রিক্সা কমিটির অভিযোগ, রেলযাত্রী থেকে স্থানীয় কিছু মানুষজনকে ওই রাস্তার ওপর মূত্রত্যাগে বাঁধা দিয়েও কোনও সুরাহা হয় না। রেলপুলিশকে বিষয়টি অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁদের দাবি, রেল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যেন ওই রাস্তার ওপর মূত্রত্যাগ বন্ধ করার ব্যাবস্থা নেয়।পাশাপাশি, প্রস্রাবের জন্য একটি মূত্রাগার তৈরি করা হোক।

দুর্গাপুর বাজারের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর রেলস্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্ম হয়ে স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তাটি থেকে বাজার শুরু হচ্ছে। ওই রাস্তাটি স্টেশনের পাশ হয়ে সিনেমা রোড হয়ে বিসি রায় রাস্তায় যোগ হচ্ছে। স্টেশন সংলগ্ন ওই রাস্তাটির প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত এলাকা মূত্রাগারে পরিণত হয়েছে। ওই রাস্তার একপাশে রয়েছে স্টেশন ও রেললাইন ও বিপরীত মুখে রয়েছে দোকানপাট। ঘিঞ্জি ও ব্যস্ততম রাস্তার একপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে অটোরিকশা। সবসময় যানজট লেগেই থাকে। পুরুষ রেল যাত্রীরা স্টেশন থেকে বেরিয়েই ওই রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে মূত্রত্যাগ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এছাড়াও স্থানীয় কিছু মানুষজনও মূত্রত্যাগ করে ওই রাস্তায় বলে অভিযোগ। বারবার দেওয়াল লিখন সহ মৌখিক ভাবে সচেতন করেও লাভ হয়নি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী দিব্যেন্দু নন্দী ও সীতারাম নন্দী বলেন, ‘সকালে দোকান খুলে বসতেই নজরে পড়ে দোকানের সামনে সারিবদ্ধভাবে মূত্রত্যাগ করছে অসভ্যের মত। প্রায় ২০ বছর ধরে একই চিত্র। মূত্রের ঝাঁঝালো দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়। এই দূষিত পরিবেশের জন্য গ্রাহকও কমে গিয়েছে। ব্যাবসায় ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপক। মহিলারা যাতায়াত করেন নাক-মুখ ঢেকে। সারাদিন কত অসভ্য মানুষকে বাঁধা দেব। বচসায় জড়াবো। তাই কিছুই বলি না। রেল বা বাজার কমিটি কোনও পদক্ষেপ নিলে উপকৃত হতাম।’

ভোগান্তির শিকার পথচারী এক মহিলা রূপা মণ্ডল বলেন, ‘উন্মুক্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে বহু পুরুষ মূত্রত্যাগ করে অসভ্যের মতো । মহিলারা ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে অস্বস্তি বোধ করেন। সেই বিষয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বিবেকহীন মানুষ গুলির। অবিলম্বে ওখানে মূত্র ত্যাগ বন্ধ করা দরকার।’
অটো চালক বুদ্ধদেব গড়াই ও মহেশ মাহাতো বলেন, ‘রুটি রুজির টানে সারাদিন ওই মূত্রের ওপর অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কিছু বলার নেই কাউকে কারণ ওটা রেল কর্তৃপক্ষের জায়গা। আমরা তাই মূত্রত্যাগ বন্ধ করতে রেল পুলিশকে চিঠি করি। কোনও সুরাহা হয় না।’

দুর্গাপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাগর সাহা বলেন, ‘বাজারে শৌচাগার রয়েছে। এছাড়াও স্টেশনের ভেতরেও রয়েছে। কিন্তু ওই রাস্তার ধারেই মূত্রত্যাগ করবে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে এখানে মূত্রত্যাগ বন্ধের জন্য ও মূত্রাগার তৈরির জন্য আবেদন করব।’ দুর্গাপুর রেলস্টেশন মাস্টার কাজল মাজি বলেন, ‘মূত্রত্যাগ বন্ধ করতে দ্রুত রেল পুলিশকে জানানো উচি্ত। স্থানীয়দের মূত্রাগারের দাবি, থাকলে রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানাতে পারেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *