তৃণমূল সম্পর্কে হামেশাই নানারকম ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেখা যায় শীর্ষ বিজেপি নেতাদের। সপ্তাহ কয়েক আগেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পূর্ব মেদিনীপুরের জনসভা থেকে দাবি করেছিলেন, বিষ্ণুপুরের দলবদলু বিধায়ক তন্ময় ঘোষের বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি হানা দেবে। তাঁর সেই ভবিষ্যদ্বাণী দিন কয়েকের মধ্যে মিলেও গিয়েছিল। স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, শুভেন্দু আগেভাগে কী ভাবে জেনে গেলেন তন্ময়ের বাড়িতে আয়কর দপ্তর হানা দেবে?
তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি রাজনৈতিক মহলে। যদিও অতীতে শুভেন্দুর বহু রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি। আবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও এরকম নানা ভবিষ্যদ্বাণী করতে দেখা গিয়েছে গত এক বছরে। কয়েক মাস আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডির তলবের পরে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডি দপ্তর থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এসে সুকান্তর ভবিষ্যদ্বাণী ভুল বলে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন অভিষেক নিজেই।
বিতর্ক তৈরির নতুন এই রাজনৈতিক ট্রেন্ডে এ বার গা-ভাসালেন দিলীপ ঘোষও। এবং শুরুতেই শুভেন্দু-সুকান্তকে টেক্কা দিলেন তিনি। দিলীপের শনিবারের ভবিষ্যদ্বাণী, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুব তাড়াতাড়ি তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রীর বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চিঠি যাবে। শনিবার বহরমপুরে ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ। সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি।
দিলীপকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘তৃণমূলের সবাই বলছে, তৃণমূলনেত্রী সব জানেন। অথচ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে ডাকছে না কেন?’ জবাবে দিলীপ বলেন, ‘চিঠি এল বলে। জানতে পারবেন। ওখানে গিয়ে বলতে হবে উনি কী কী জানেন। কেজরিওয়ালও চিঠি পেয়েছে।’ এই তথ্য দিলীপের কাছে কী ভাবে এলো, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি মেদিনীপুরের সাংসদ।
বিজেপিরই একাংশের মত, আসলে দিলীপ কিছুই জানেন না। চোখ বুজে তির মেরেছেন উনি। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘নানারকম ভবিষ্যদ্বাণী করে আমাদের দলের সবাই ঝড়ে বক মারার চেষ্টা করছেন। দিলীপ ঘোষই বা কেন পিছিয়ে পড়বেন। তিনিও আসরে নেমে পড়েছেন।’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘প্রথমত, এই ধরনের মন্তব্য কুরুচিকর। দ্বিতীয়ত, ইডি, সিবিআই যে তদন্তের নামে প্রহসন চালাচ্ছে সেটা দিলীপবাবুর এ সব ভিত্তিহীন সংলাপ থেকেই স্পষ্ট।’