Dengue Fever : ডেঙ্গির মধ্যে পিরিয়ডই কি ডেকে আনল বিপদ? বারাসতে মৃত্যু – barasat 15year old girl died of dengue during her period


এই সময়, বারাসত: মাসখানেক বৃষ্টি হয়নি। অল্পস্বল্প ঠান্ডাও পড়ছে। তবু ডেঙ্গির বলি রোখা গেল না। এ বার বারাসতের ১৫ বছরের একটি মেয়ের মৃত্যু হলো ডেঙ্গিতে। শুক্রবার কলকাতার একটি নার্সিংহোমে মার যায় শ্রাবণী সাহা। নার্সিংহোমে ভর্তির সময়ে তার প্লেটলেট কাউন্ট ছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভালো থাকলেও শুক্রবার ভোরে ডেঙ্গি আক্রান্ত শ্রাবণী শক সিনড্রোমে চলে যায়। তারপর আর তাকে বাঁচানো যায়নি। জানা গিয়েছে, ডেঙ্গির মধ্যেই শ্রাবণীর পিরিয়ড হয়েছিল। সেটাই বিপদ বাড়ায় বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসক বিবর্তন সাহা বলেন, ‘ডেঙ্গি আক্রান্তের শরীরে আভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এর সঙ্গে পিরিয়ড শুরু হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। তা থেকে রোগী দ্রুত শক সিনড্রোমে চলে যায়।’

বারাসতের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দপুরীতে বাড়ি শঙ্কর সাহার। তাঁর মেয়ে শ্রাবণী বারাসতের কালীকৃষ্ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ২০২৪-এ মাধ্যমিক দেওয়ার কথা। সামনেই টেস্ট পরীক্ষা। সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। কিন্তু তার মাঝেই জ্বর আসে। জ্বর গায়ে মঙ্গলবার বাংলা পরীক্ষা দেয়। সেদিন রাতেই শ্রাবণীর ডেঙ্গি রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। দেরি না করে মেয়েকে বারাসতের একটি নার্সিংহোমে রাতেই ভর্তি করে দেন শঙ্কর। স্কুলে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, শ্রাবণী হয়তো বাকি পরীক্ষা আর দিতে পারবে না। কিন্তু মেয়ে যে আর বাড়ি-ই ফিরবে না, ভাবতে পারেননি শঙ্কর।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বেশ ভালোই ছিল শ্রাবণী। ভর্তির সময়ে শ্রাবণীর রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট ছিল ১ লক্ষ ৭০ হাজার। ডাক্তারদের মতে এই প্লেটলেট নর্মাল। কিন্তু শুক্রবার ভোর থেকে শ্রাবণী শক সিনড্রোমে চলে যায়। সে কথা জানার পরেই পরিবারের লোকজন দ্রুত শ্রাবণীকে নিয়ে যান কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার কলকাতার নার্সিংহোমে মারা যায় শ্রাবণী।

বারাসতের যে নার্সিংহোমে মেয়ে ভর্তি ছিল, সেখানকার পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পরিবারের। ডেঙ্গি আক্রান্ত শ্রাবণীর পিরিয়ড হয়েছে জেনেও হাসপাতাল যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ বাবা শঙ্কর সাহার। এ নিয়ে তিনি এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের না করলেও, বারাসতের চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানিয়েছেন। অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন ওঁরা। শ্রাবণীর বাবা সোমবার লিখিত অভিযোগ জানাবেন।’

চলতি বছরে বারাসতে অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। কয়েক জন মারাও গিয়েছেন। কিন্তু এখন প্রকোপ প্রায় নেই। গত ২৪ ঘন্টায় বারাসতে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র চার। শনিবার নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি। আক্রান্তের গ্রাফ জেলাতেও অনেকটা কম। এই পরিস্থিতিতেও ডেঙ্গিতে শ্রাবণীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *