১৯৭৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৫৩ একর জায়গার উপরে ছিল এই সেন্ট্রাল পার্ক। এখন তার কোথায় কী আছে, কতটা ফাঁকা আছে, কতগুলি পাকা বিল্ডিং হয়েছে, কোথায় জমি অন্য ভাবে ব্যবহার হচ্ছে–তার বিস্তারিত জানাতে হবে পুর-কমিশনরাকে। এই রিপোর্ট জমা পড়ার পর আদালত জানাবে পরবর্তী শুনানি কবে হবে। এর আগে বেহালা থেকে ধর্মতলা মেট্রোর কাজে ময়দানে গাছ কাটার অভিযোগে মামলা উঠেছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ওই মামলাতেও আপাতত গাছ কাটা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মামলাকারী আইনজীবী অরুনাংশু চক্রবর্তীর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ রয়েছে, কোনও পার্কে অন্য কোনও কাজ করা যায় না। অথচ সেখানে কমিউনিটি হল তৈরি করেছে পুরসভা। মেট্রোরেল সেখানে বড় দোতলা বিল্ডিং বানিয়েছে। বিল্ডিংয়ের অর্ধেকই অবশ্য ফাঁকা পড়ে। পার্কের প্রায় ৮০ শতাংশ দখল হয়ে গিয়েছে। পার্কের জায়গায় জল প্রকল্প থেকে আন্তর্জাতিক বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। পার্কের জায়গায় নিয়মিত মেলা হচ্ছে। আইনজীবীর আরও বক্তব্য, এর আগে রাজ্যের দেওয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ১৯৯৭ সালে সেখানকার জমি মেট্রোরেলকে দেওয়া হয়েছে। অথচ তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে এই মেট্রো প্রকল্পের সূচনা হয়।
পুরসভা আগেই জানিয়েছে, সেন্ট্রাল পার্কে মেলার জায়গা রয়েছে। সেখানে মেলা করতে দিতে হবে। তাতে মামলাকারী আপত্তি জানালে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, কোনও স্থায়ী কাঠামো না গড়া গেলেও জনগণকে মেলা করা থেকে আটকানো যায় না। মামলাকারী আইনজীবী বিভিন্ন নির্দেশ তুলে ধরে অন্য কোনও কাজে পার্ক ব্যবহার করা যায় না বলে দাবিতে অনড় থাকেন। তাঁর দাবি, ম্যাপে কোথাও মেলার জায়গার কথাও বলা নেই।
পার্কের ভিতরে মেট্রো রেলের বিল্ডিং কী করে হলো, সেই প্রশ্ন তোলে আদালতও। কারণ, পার্কে কোনও নির্মাণকাজ না করার ব্যাপারে আগেই নির্দেশ ছিল। তার পরেও কী করে এটা হলো–জানতে চেয়েছে আদালত। তবে এখনই ওই বিল্ডিং ভাঙার নির্দেশ দেয়নি আদালত। আগে সবদিক খতিয়ে দেখতে চাইছে হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বিধাননগর পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে, পার্কে নতুন করে যাতে কোনও নির্মাণকাজ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং পার্কের জায়গায় কোথায় কি নির্মাণ এবং ফাঁকা জায়গা রয়েছে–তার বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে।