Bengal BJP : ছিলেন ৫, টার্গেট ১৪? এত মহিলা প্রার্থী পাবে কি বিজেপি – bjp list of candidates for the lok sabha polls in bengal is going to be prepared according to the provisions of the women reservation act


মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
দায়সারা পাঁচের বদলে এ বার কি বাধ্যতামূলক চোদ্দো? লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির প্রার্থী তালিকা তৈরি হতে চলেছে মহিলা সংরক্ষণ আইনের নিয়ম মেনেই। সূত্রের দাবি, সেক্ষেত্রে লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় অন্তত ১৪ জন মহিলা মুখ ঠাঁই পেতে চলেছেন। পাঁচ বছর আগে এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৫! তাঁদের মধ্যে সংসদে গিয়েছিলেন মাত্র দু’জন।

সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়ে গেলেও ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে তা কার্যকর হচ্ছে না। তবে মহিলা সংরক্ষণ আইন মেনেই বাংলায় লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণের হিসেবে, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৪টিতেই মহিলা প্রার্থী দিতে চান তাঁরা। বিজেপির সংসদীয় ইতিহাসে যা নজিরবিহীন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

গত রবিবারই তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। যার পিছনে মহিলা ভোটারদের অবদান যে অনেকখানি। বিশেষত, মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের জন্য ‘লাডলি বেহনা’ ও ‘লাডলি লক্ষ্মী’ প্রকল্প দু’টির সুফল ভোটবাক্সে পেয়েছে পদ্ম। বাংলার ক্ষেত্রে অবশ্য মহিলা ভোটব্যাঙ্কের হাওয়াটা এখনও পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলি যে বাংলার মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, তা অজানা নয় অমিত শাহ-জেপি নাড্ডাদের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ২০২১ বিধানসভা ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’-এই স্লোগানেই বিজেপিকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বড়সড় অঘটন না-ঘটলে ২০২৪-এও বাংলার মহিলাদের আশীর্বাদ জোড়াফুলের দিকেই থাকবে বলে পর্যবেক্ষণ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের। তাই মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়িয়ে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের উপর স্নায়ুচাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন তাঁরা।

কিন্তু এত মহিলা প্রার্থী কোথা থেকে আসবে?
এনিয়ে সন্দিহান গেরুয়া শিবিরই। এমনিতেই বঙ্গ-বিজেপিতে মহিলানেত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা। সেক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বকে সিনেমা ও ক্রীড়া জগতের মহিলা তারকাদের উপরই ভরসা করতে হবে। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘২০১৯-এ বাংলায় আমাদের মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৫। উল্টোদিকে, তৃণমূলের মহিলা প্রার্থীর ছিলেন ১৫ জন। এ বার আমরা মহিলা মুখ না বাড়ালে তৃণমূলের সুবিধা হয়ে যাবে।’ রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা সব সময়ে নারীর ক্ষমতায়নের উপর জোর দেন। মহিলা সংরক্ষণ আইন এ বারের লোকসভা নির্বাচনে লাগু না হলেও আমাদের দলের মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বাড়বে বলেই আমার বিশ্বাস।’

দিল্লির নেতারা এক তৃতীয়াংশ আসনে মহিলাদের প্রার্থী করতে চাইলেও বঙ্গ-বিজেপির একাংশের এ ব্যাপারে তীব্র আপত্তি রয়েছে। তাঁদের যুক্তি, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বিষয়ই দেখা উচিত-তাঁর জেতার সম্ভাবনা কতটা। মহিলা-পুরুষ বিভাজনে না যাওয়াই ভালো। বিজেপির অন্য অংশের পাল্টা যুক্তি, তৃণমূলের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে হলে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়াতেই হবে।

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘লোকসভায় ভোটে কাকে প্রার্থী করা হবে, কাকে হবে না, সেটা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক করেন। মহিলা প্রার্থীর সংখ্যার বাড়ুক, সেটা আমরা সবাই চাই। কারণ, বিজেপিই সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েছে। যোগ্য মহিলা মুখ পেলে অবশ্যই তাঁকে টিকিট দেওয়া উচিত।’

যদিও বিজেপির এই কৌশলকে কটাক্ষ করে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা তো চাই, সব দলেই মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ুক। তৃণমূলই পথ দেখিয়েছে। বাংলাই একমাত্র রাজ্য, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী সবাই মহিলা। তবে শুধু মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ালেই হবে না, হাথরসের মতো নারী নির্যাতনের ঘটনা যাতে দেশে না ঘটে, সে দিকেও বিজেপি নজর দিক।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *