চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেও মেয়ের ব্যথা সারানোর জন্য কোথাও আশার আলো পাননি পল্লে দম্পতি। মেয়ের পায়ের ব্যথা সারিয়ে তোলার জন্য তাঁকে যোগাসনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করেছিলেন বিশ্বজিৎ। সেই থেকেই সৌমির যোগাসনের প্রতি ভালোবাসা শুরু।
এরপর একের পর এক সাফল্য অর্জন করে এসেছেন সৌমি। প্রথমে ছোট ছোট প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন তিনি। ঝুলিতে আসত কাঙ্খিত জয়ও। তারপর জেলা স্তর ও রাজ্য স্তর হয়ে জাতীয় স্তরে খেলতেন সৌমি। শ্রীরামপুরের রমেশ চন্দ্র গার্লস স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনার পাশাপাশি যোগাসনে চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে অসুস্থ বাবাকে সাহায্য করাই আপাতত তাঁর কাছে প্রাধান্য।
বছর পাঁচেক আগে হার্ট অ্যাটাক হয় বিশ্বজিৎবাবুর। তারপর থেকে চিকিৎসকরা তাঁকে ভারী কাজ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু, সংসার, মেয়ের পড়াশোনা, যোগাসন শেখাতে উপার্জনের একমাত্র পথ তাঁর চায়ের দোকান। তাই বাবাকে সাহায্য করার জন্য প্রতিদিনই দোকানে যান সৌমি।
এরই মধ্যে সময় বার করে চলে যোগাসনের প্র্যাকটিস। এরই মধ্যে চলে যোগাভ্যাসও। এই বিষয়ে সৌমি জানান, পরিস্থিতির চাপে পড়ে তাকে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়। বাবার কাঁধে গোটা সংসারের জোয়াল, তা তিনি ভালোই বোঝেন। সেই জন্যই সাহায্যে হাত লাগান। আর এরই ফাঁকে দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যোগাভ্যাস।
সৌমি জানান, তাঁর স্বপ্ন আগামীদিনে আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের হয়ে পদক জয় করা। তবে তাদের পরিবারের আর্থিক সংকট মাঝে মধ্যে তাঁকে দুঃশ্চিন্তাতে ফেলে। সরকারি সাহায্যের জন্যও আবেদন করেছেন সৌমি।
তাঁর বাবা বিশ্বজিৎ বলেন, ‘ও যখন ক্লাস থ্রিতে পড়ে সেই সময় থেকে পায়ের ব্যথা সারানোর জন্য আমরা যোগা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করি। তারপর ও নিজের চেষ্টায় এগিয়েছে।’ অন্যদিকে, সৌমির যোগা প্রশিক্ষণ দেবাশিস বলেন, ‘ও সম্প্রতি জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছে। আগামীদিনে আরও সফল হবে।’