জানা গিয়েছে, রবিবার রাত্রি ১২টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় একটি কুয়োর কাছে এক ব্যক্তিকে দেখতে পান কয়েকজন এলাকাবাসী। অন্ধকারে তাঁরা প্রথমে কিছুটা ভয় পেলেও পরে সাহসিকতার সঙ্গে কাছে যেতেই চম্পট দেয় ওই ব্যক্তি। এরপরেই স্থানীয়রা লক্ষ্য করেন যে কুয়োর মধ্যে প্রায় আটটি সারমেয় ফেলে দিয়েছে ওই ব্যক্তিটি। তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে দড়ি নিয়ে এসে তাঁরা সারমেয়গুলিকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন। ৮ টি সারমেয়র মধ্যে ৬টি ছিল শাবক। সারমেয় শাবকগুলি ততক্ষণে জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে।
এরপর পাড়ার আরও লোকজন জড়ো হওয়ার পর এক ব্যক্তি কুয়োয় নেমে সারমেয়গুলিকে উদ্ধার করেন। দু’টি বড় সারমেয়কে জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও ছয়টি শাবককে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা এলাকায়। ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা মামনি ধীবর রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন। তাঁর আশঙ্কা, ওই এলাকায় বহু ছোট ছোট ছেলে মেয়েও খেলাধূলা করে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি যে কোনও সময় কোন শিশুকেও কুয়োয় ফেলে মেরে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
এদিকে এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় অন্ডাল থানার পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবিকের সদস্যরা। সারমেয়দের হত্যাকারীর সন্ধানে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবিকের সম্পাদক সুবীর মণ্ডল এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছেনে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান সুবীর। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় এই ঘটনা ঘটিয়েছে না কি তার কোনও মানসিক বিকার আছে, সেই সমস্ত বিষয় তদন্ত হোক।’ পাশাপাশি প্রাণীপ্রেমী অবন্তিকা শ্যামরায় চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনায় যেন যথাযথ তদন্ত করা হয় ও উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়। এই ধরণের ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিগত কয়েক বছর ধরে পরপর প্রাণী হত্যা হচ্ছে। এভাবে প্রাণী হত্যার ঘটনা বাড়লে, একদিন এরা (সারমেয়) নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।