Belur Math : কল্পতরু উৎসবে বেলুড় মঠ-কাশীপুর উদ্যানবাটীতে ভক্তের ঢল, বিশেষ পুজো-প্রসাদ বিতরণ – huge number of devotees gather at belur math and kashipur udyanbati on kalpataru utsav 2024


সময়টা ১৮৮৫ সালের শেষের দিক। ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের শরীরটা বিশেষ ভাল যাচ্ছিল না। গলায় কষ্ট, সঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডায় একেবারে কাবু হয়ে পড়েছিলেন ঠাকুর। চিকিৎসার জন্য ঠাকুরকে কাশীপুরে শ্রী গোপাল ঘোষের বাগান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। বাড়িটি বেশ বড়, চারিদিকে গাছগাছালি, খোলামেলা। সেখানে থাকতে ঠাকুরের বেশ ভালোই লাগছিল। চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকারের কড়া নিষেধ, কথা বলা চলবে ঠাকুরের, তাহলেই বাড়বে গলার কষ্ট। সেই মতো ঠাকুরের শিষ্য নিরঞ্জন মহারাজ কড়া প্রহরায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও কমবেশি কথা বলেই যেতেই ঠাকুর।

দেখতে দেখতে চলে এলে ১৮৮৬ সাল। বছরের প্রথম দিনটিতে ঠাকুরের শরীর কিছুটা ভালো। ঠাকুর কারও সঙ্গে দেখা করছেন না জেনেও তাঁর গৃহী ভক্তরা বহু দূরদূরান্ত এসেছেন তাঁর সঙ্গে সাক্ষৎ করতে। ওই বাড়িরই একতলায় থাকতেন শ্রী শ্রী মা সারদাদেবী। বেলার দিকে মা পুজোয় বসেছিলেন। হটাৎ দেখলেন সিঁড়ি দিয়ে যেন একটা ছায়ামূর্তি চলে গেলে। মা ভবলেন, হয়ত তাঁর ছেলেদের মধ্যেই কেউ বাগানের দিকে গেলে। তিনি ফের পুজোয় মন দিলেন।

এদিকে ঠাকুরের একবার দর্শন পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা তাঁর গৃহী ভক্তরা সেদিন যা দেখলেন, তা তাঁদের সারাজীবনের পরমপ্রাপ্তি। দেখলেন নতুন ধুতি ও গরম পোশাক পরে রোগভোগে ক্লান্ত দেহ নিয়ে বাগানের পথ পেরিয়ে তাঁদের দিকে এগিয়ে আসছেন ঠাকুর। সঙ্গে সঙ্গে শোরগোল পড়ে গেল ভক্তদের মধ্যে। সকলেই ঠাকুরের কৃপা পাওয়ার জন্য দু’হাত জোর করে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকলেন। ঠাকুর তাঁর গৃহী ভক্তদের উদ্দেশে বললেন ‘তোমাদের চৈতন্য হোক’। কল্পতরু হলেন ঠাকুর।

তারপর থেকে আজও ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনে উদযাপিত হয়ে চলেছে কল্পতরু উৎসব। এদিন ভোর ৪টেয় কাশীপুর উদ্যানবাটীতে মঙ্গলারতির মধ্যে দিয়ে শুরু হয় উৎসব। ৭ টার সময় শুরু হয় বিশেষ পুজো। চলছে ভক্তিগীতি, কীর্তন। দুপুরের পরে ধর্মসভাও হতে চলেছে। এই উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা। একই ছবি বেলুড়মঠেও। সেখানেও চলছে বিশেষ পুজো ও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ভিড় করেছেন প্রচুর ভক্ত। রয়েছে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থাও। প্রত্যেকেই নতুন বছরের প্রথম দিনে ঠাকুর, মা ও স্বামীজির আশীর্বাদ নিয়ে পথচলা শুরু করতে চাইছেন। এই উপলক্ষে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়, তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *