Ram Mandir : রাম মন্দিরে যাচ্ছে ফুলিয়ার ‘রামায়ণ’ শাড়ি, অবহেলায় দিন কাটছে কৃত্তিবাসী লাইব্রেরির – biren kumar basak nadia fulia weaver will send his ramayana shari to ayodhya ram mandir


অযোধ্যার রাম মন্দিরে যাচ্ছে বিখ্যাত তাঁত বস্ত্র শিল্পী বীরেন কুমার বসাকের শাড়ি। তবে সেটি অবশ্য আজ নয়, আগামীকাল মঙ্গলবারের পরে যে কোনও দিন গিয়ে সেই শাড়ি দিয়ে আসা যাবে রাম মন্দিরে। নয়তো করতে হবে ক্যুরিয়ার। এক ফেসবুক পোস্টে তেমনই জানালেন শিল্পী নিজে। একইসঙ্গে শাড়িটি তৈরির ইতিহাসও জানিয়েছেন শিল্পী।

ফেসবুক পোস্টে বীরন বসাক জানান, ১৯৯৫ সালে জামদানিতে কৃত্তিবাসী রামায়ণের কিছু অংশকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। প্রায় ২ বছরের চেষ্টায় সম্পন্ন হয়েছিল সেই কাজ। শিল্পী আরও জানান, তাঁর অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল ওই শাড়িটি রাম জন্মভূমি মন্দিরে দান করার। অবশেষে তাঁর কথা হয় মন্দির কমিটির সঙ্গে। কমিটির তরফে গোপালজি তাঁকে জানান, হয় শাড়িটি ক্যুরিয়ার করা যেতে পারে। নয়তো মন্দিরে গিয়ে দান করে যেতে পারে, তবে সেটি যেতে হবে ২২ – ২৩ জানুয়ারির পর।

শাড়িটি তৈরির ইতিহাস সমম্পর্কে বলতে গিয়ে বীরেন বসাক জানান, এই ফুলিয়াতেই কবি কৃত্তিবাস ওঝার জন্ম হয়েছিল। এমন কী এই ফুলিয়াতেই রয়েছে এশিয়ার একমাত্র রামায়ণ লাইব্রেরি। আর এই শাড়িটি তৈরি করতে গিয়ে তাঁরা ফুলিয়া কৃত্তিবাস লাইব্রেরির প্রচুর সাহায্যও পেয়েছিলেন। শাড়িটি গত ২০১৪ সালে লিমকা বুক অফ রেকর্ডস এই রামায়ণ শাড়ির জন্য সম্মানিত করে শিল্পী বীরেন কুমার বসাককে। সেই সর্টিফিগেটও ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে শেয়ার করেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে এই শাড়ি রাম মন্দিরে শোভা পেলে শিল্পী তথা গোটা জেলার মুকুটে আরও এক নয়া পালক যুক্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


এদিকে যে লাইব্রেরির কথা শিল্পী বীরেন বসাক তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেছেন, সেটি বর্তমানে বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের একংশের। ১৯৬০ সালে কৃত্তিবাসের স্মরণে ফুলিয়ার বয়রায় একটি গ্রন্থাগার তথা কমিউনিটি হল তৈরি করেছিল তৎকালিন রাজ্য সরকার। ১৯৬৭ সালে গ্রন্থাগারটি খুলে দেওয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। সেখানে ১৪টি ভাষায় রামায়ণের অনুবাদ রয়েছে। আছে কৃত্তিবাসের স্বহস্তে রচিত রামায়ণের পান্ডুলিপির ফটোকপি। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ, বাংলায় রামায়ণের রচয়িতা কৃত্তিবাস ওঝার স্মৃতিতে তৈরি সেই লাইব্রেরি বর্তমানে অবহেলিত। লাইব্রেরির আশেপাশে নোংরা আবর্জনায় ভর্তি। অবহেলার চিহ্ন চারিদিকে। সপ্তাহে মাত্র ২ দিন, শুক্র ও শনিবার একজন গ্রন্থাগারিক ওই লাইব্রেরি ও সংগ্রহশালা খোলেন। আরও একজন সপ্তাহে ২ দিন আসেন। কিন্তু বাইরে থেকে যারা আসেন তাদের পক্ষে জেনে আসা সম্ভব নয়। স্বাভাবিক ভাবেই কৃত্তিবাস নামাঙ্কিত গ্রন্থাগারটিতে রক্ষিত অমূল্য সব বই পড়তে গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের।

একইসঙ্গে কবি কৃত্তিবাস ওঝা রচিত রামায়ণের মূল পান্ডুলিপি এখনও কেন ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরান গেল না সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক আগেই কৃত্তিবাস ওঝার হাতে লেখা কৃত্তিবাসী রামায়ণ চলে গিয়েছিল ফরাসি ঔপনিবেশিকদের হাতে। ১৭৯৪ সালে ফ্রান্সের জাতীয় গ্রন্থাগার বিবলিওথেক ন্যাশনালে এই পাণ্ডুলিপিটি ক্যাটালগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ফুলিয়ায় বয়রার সংগ্রহশালায় কবি কৃত্তিবাস ওঝার হাতে রচিত রামায়ণের মূল পাণ্ডুলিপির মাইক্রোফিল্ম ও ফটোকপি রক্ষিত রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পরেও কেন্দ্রের কোনও সরকার আজ পর্যন্ত বাঙালির শিকড় কৃত্তিবাসের স্বহস্তে রচিত কৃত্তিবাসী রামায়ণকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপর হয়নি বলেই অভিযোগ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *