বর্তমানে শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা ৭.৪৭ কাঠা। অর্থাৎ, কোনও একজন ব্যক্তি নিজে এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে সর্বাধিক ৭.৪৭ কাঠা জমির মালিকানা রাখতে পারেন। এর থেকে জমি বেশি থাকলে তা সরকার ভেস্ট করে নেবে।
এদিন অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত কয়েক দশকে সারা দেশের এবং বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক, আর্থিক ও শিল্প ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমির ঊর্ধ্বসীমা একটা অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৯৯৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার আর্বান ল্যান্ড সিলিং অ্যাক্ট রিপিল করেছে এবং অনেক রাজ্যও এই আইন রিপিল করেছে। আমাদের রাজ্যেও এই পরিপ্রেক্ষিতে আর্বান ল্যান্ড সিলিং অ্যাক্টটি পুনর্বিবেচনা করা হবে। তার সঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মসট অ্যাক্ট আইনটিরও ঊর্ধ্বসীমা সংক্রান্ত ধারাগুলির প্রয়োজনীয় পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
সরকারের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতা বলেন, ‘জমির ঊর্ধ্বসীমা আইনের জন্য অনেক বড় লগ্নিকারী বাংলা থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। এই আইন বদল করলে পশ্চিমবঙ্গে লগ্নির বাতাবরণ সম্পর্কে এখনকার থেকে অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। এর ফলে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথও খুলে যাবে। পাশাপাশি, সমস্ত এলাকায় জমির লিজ়হোল্ড থেকে ফ্রিহোল্ড করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা-ও রাজ্যে আরও লগ্নি-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’
শিল্পপতি সঞ্জয় বুধিয়ার বক্তব্য, ‘কনভার্সন ফি দিয়ে লিজ়হোল্ড জমিকে ফ্রিহোল্ড করা রাজ্যে ইজ় অফ ডুয়িং বিজ়নেস বাড়াতে প্রভূত সাহায্য করবে। আর্বান ল্যান্ড সিলিং অ্যাক্ট তুলে দিলে শিল্পমহলের বহুদিনের অনুরোধ পূরণ হবে।’
শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন রাজ্যের পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত চেম্বার অফ কমার্স, এমসিসিআই-এর মতো বণিকসভাগুলিও। সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়া-র সিনিয়র ডিরেক্টর-ইস্ট, অভিজিৎ দাসের মতে, এই আইন সরকার তুলে দিলে রাজ্যে আইনি জটে আটকে থাকা কয়েক লক্ষ একর জমি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।