মেডিক্যাল সূত্রের খবর, দিন পাঁচেক আগে সেখানে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন পার্ক সার্কাস এলাকার এক বছর কুড়ির তরুণী। মঙ্গলবার সন্তান-সহ তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। সেইমতো দুপুরেই মোরগ-সহ পুজোর বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে মেডিক্যালে এসে হাজির হন ওই তরুণীর স্বামী ও বাড়ির লোক।
আর ছুটির পরে মা-সন্তানকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে, তাঁরাই প্রসূতি বিভাগের (ইডেন বিল্ডিং পিছনের দিকে নিরিবিলি জায়গায় আয়োজন করে ফেলেন পুজোর। পান, সুপুরি, কর্পূর ইত্যাদির ডালা সাজিয়ে, পানের উপর লাড্ডু রেখে ফুল, মালা দিয়ে সাজানো হয় নৈবেদ্য। তার পর গঙ্গাজল দিয়ে জায়গাটি পরিষ্কার করে সেখানে রাখা হয় মোরগটিকে। তাকেও মালা পরিয়ে, স্নান করানো হয়। তার পর বলি দেওয়া হয়।
এশিয়ার প্রথম মেডিক্যাল কলেজ, যেখানে সমাজের সব রকমের সংস্কারকে হেলায় উড়িয়ে প্রথম কোনও ভারতীয়ের হাতে শব ব্যবচ্ছেদ হয়েছিল আজ থেকে ১৮৮ বছর আগে, সেই রকম একটি প্রতিষ্ঠানে এমন একটি অভাবনীয় ঘটনা ঘটায় হতবাক মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, ‘এই একবিংশ শতকেও যে খাস কলকাতার বুকে এমন কাণ্ড কোনও পরিবার ঘটাতে পারে, তা ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়। এ কোথায় যাচ্ছি আমরা! খুবই লজ্জাজনক দৃষ্টান্তের সাক্ষী রইলাম আমরা সকলে।’
ঘটনার নিন্দা করছেন মেডিক্যালের উপাধ্যক্ষ তথা মেডিক্যাল সুপার অঞ্জন অধিকারীও। সদ্যোজাত ওই পুত্রসন্তানের বাবা, যিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, পেশায় সাফাইকর্মী সেই যুবক অবশ্য নিরুত্তাপ। তাঁর বক্তব্য, ‘এটা আমাদের পরিবারের রীতিনীতির ব্যাপার।’