এই সমস্যার কথা আঁচ করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এদিন কোচবিহারের একটি অনুষ্ঠানে এসে বলেন, ‘এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে স্কুলে ঢুকে পড়ছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছে। আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলব।’ বেথুন স্কুলের অ্যাসিস্ট্যান্ট মিসট্রেস ইনচার্জ শর্বরী ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রি-প্রাইমারি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। শনিবার প্রাথমিকের অভিভাবকদের বৈঠকও ডাকা হয়েছে আগামী সপ্তাহ থেকে বিকল্প ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে। নবম-দশমের ক্লাস চলছে। এই পরিস্থিতিতে একাদশের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও নিতে হবে।’
উত্তরপাড়া সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর কথায়, ‘মার্চের শুরুতে বাহিনী একবার ঢুকলে ভোট পর্ব ও গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাহিনী যাবে না। ফলে তিনমাস স্কুল বন্ধ রাখতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য বহু স্কুল ছুটি ছিল। এখন বাহিনীর কারণে স্কুল বন্ধ থাকলে, পড়াশোনা হবে কবে?’
ভোটের কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রাখতে স্কুল অধিগ্রহণ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এখন থেকেই পর্ষদ অনুমোদিত স্কুলে-স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার বিষয়ে কোনও খবর সভাপতি হিসাবে আমাকে বা পর্ষদকে জানানোই হয়নি। ফলে কোনও ধারণাই নেই।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘পর্ষদের সব স্কুল না নিয়ে আধা সামরিক বাহিনী রাখার জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলো তো নেওয়া যেত! এতে তো বোর্ডগুলোর মধ্যেও বৈষম্য হচ্ছে।’
তা হলে কি সিবিএসই স্কুলগুলোর তুলনায় পর্ষদের স্কুলগুলো পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো? উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, ‘বহু স্কুলে এখনও একাদশের থিওরি ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা বাকি। এই পরিস্থিতিতে ফোর্স ঢুকলে পরীক্ষা হবে কী করে? আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমস্যা সমাধানে কথা বলব।’