দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন থেকে দুর্গাপুরেই থাকবেন আজাদ। স্টিল টাউনশিপের এ-জোনের অরবিন্দ রোডে ডিএসপির একটি আবাসন বুক করেছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনে দলীয় কাজের জন্য এই আবাসনটি হবে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অফিসঘর। সেখানেই থাকবেন কীর্তি।
জনগর্জন সভার প্রচারে গত ৫ মার্চ দিল্লি থেকে অন্ডাল বিমানবন্দরে আসেন কীর্তি আজাদ। তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন একঝাঁক তৃণমূল নেতা-কর্মী। অন্ডালে নেমে তিনি চলে গিয়েছিলেন পাণ্ডবেশ্বরে। সেখানে দীর্ঘ সময় তাঁকে নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল।
তখনই তাঁকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দুর্গাপুর-বর্ধমান কেন্দ্রে সম্ভবত প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন এই ভারতীয় ক্রিকেটার। ৬ মার্চ সেই খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ‘এই সময়’ পত্রিকায়। যদিও কীর্তি জানিয়েছিলেন, তিনি জনগর্জন সভার প্রচারে এসেছেন। সভা থেকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নির্দেশ দেবেন সেইরকম কাজ করবেন তিনি।
তবে রাজনীতির ময়দানে আনকোড়া নন কীর্তি। তাঁর রাজনীতির কেরিয়ার শুরু বিজেপির হাত ধরে। ২০১৯-এ বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন দ্বারভাঙার প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি। ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর কংগ্রেস ছেড়ে দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। গোয়াতে তৃণমূল কংগ্রেসের ইন-চার্জ হিসেবেও কাজ করেছেন।
দুর্গাপুরে আসার পর থেকে জনগর্জন সভার সমর্থনে দুর্গাপুরে একাধিক সভা করেছেন দিল্লি রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। প্রার্থী পদে তাঁর নাম ঘোষণার পর কীর্তি আজাদ বলেন, ‘দুর্গাপুর জায়গাটা আমার কাছে নতুন নয়। সেইলে চাকরি করার সুবাদে ইন্টার স্টিল ক্রিকেট খেলার জন্য একাধিকবার দুর্গাপুরে এসেছি। অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটলেও স্টিল টাউনশিপ সেই একই রয়ে গিয়েছে। দিদি অনেক বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। দায়িত্ব পালন করতে হবে। আজ ব্রিগেডের মাঠে দেখেছি রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন। নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মতো দক্ষ নেতা রয়েছেন আমার সঙ্গে। মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার রয়েছেন। আর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা তো আছেনই। জয় হবেই।’
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হিসেবে শত্রুঘ্ন সিনহার নাম আগেই ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। এবার ঘোষণা হলো দুর্গাপুর-বর্ধমান কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর নাম। পাশাপাশি দুই কেন্দ্রে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীকে জেতানোর গুরুদায়িত্ব এবার জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর উপর। এত দায়িত্ব সামলাবেন কী ভাবে?
জবাবে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ নরেন্দ্রনাথ বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে মাত্র আড়াই বছরে নিজের এলাকায় ১৭ কোটি টাকার কাজ করে আসানসোলের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। আর কীর্তি আজাদ ভারতীয় ক্রিকেট দলে অলরাউন্ডার ছিলেন। তিনিও ছক্কা হাঁকাবেন। দু’জনই জয়ী হবেন।’