Lok Sabha Election 2024 : সিএএ কি ব্যুমেরাং! জোর চর্চা বনগাঁয় – lok sabha election 2024 caa in face of vote strongly discussed in bangaon


আশিস নন্দী, বনগাঁ
দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। বাদ নেই বনগাঁও। ভোটের মুখে সিএএ চালুর ঘোষণায় বনগাঁয় এখন জোর আলোচনা। কেউ বলছেন, সিএএ দিয়েই বাজিমাত করবে বিজেপি। কারও মতে, সিএএ-ই ব্যুমেরাং হয়ে যাবে গেরুয়া শিবিরের কাছে। বিজেপির একটি অংশ এ নিয়ে চিন্তায় রয়েছে।যদিও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছেন না। তৃণমূল শিবির আত্মবিশ্বাসী— বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র এ বার উদ্ধার হবেই। গাইঘাটা থানার সামনে যশোহর রোডের ঠিক উল্টো দিকে ঠাকুরনগর যাওযার রাস্তার মুখেই একটা চায়ের দোকান। চায়ের দোকানে ঢুকতেই নজরে পড়ল বেঞ্চে ৪-৫ জন বসে আছেন। হাতে চায়ের ভাঁড়। রাজনীতি নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।

সিএএ নিয়ে তাঁদের কাছে প্রশ্ন রাখতেই পরিচয় জানতে চাইলেন। সাংবাদিক বলায় একজন জানালেন, বনগাঁয় এবার তৃণমূলের জয়ের সম্ভবনাই বেশি। আর একজন বললেন, ঠাকুরবাড়ির তালা ভাঙা বিজেপিকে বিপদে ফেলবে। তৃতীয় জন অবশ্য গেরুয়া শিবিরের উপরেই বাজি ধরছেন।

২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় তৃণমূলের জয়জয়কার হলেও, ঘাসফুলের বিজয়রথ আটকে গিয়েছিল বনগাঁ লোকসভা এলকার বিধানসভাগুলিতে। একমাত্র স্বরূপনগর বাদ দিলে বাকি ছ’টি কেন্দ্রেই জিতেছিল বিজেপি। পরে বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে ফিরে গিয়েছিলেন। এরপরের পুরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের একাধিপত্য অবশ্য দেখা গিয়েছিল।

বিজেপি যদি ১৯ এবং ২১-এর ফল নিয়ে আশাবাদী হয়, তৃণমূলের ভরসা পুরসভা ও পঞ্চায়েতের রেজাল্ট। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি মতুয়া অধ্যুষিত। মতুয়া, নমশূদ্র ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৫ শতাংশ। স্বাভাবিক ভাবেই এই কেন্দ্রে জয় পরাজয়ে মতুয়া-নমশূদ্র ভোট বড় ফ্যাক্টর। তাই মতুয়া-নমশূদ্রদের পাশে পেতে সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাই প্রচারে নেমে পড়েছেন।

তবে বনগাঁ কেন্দ্রে বিজেপির থেকে ভোটের প্রচারে এখনও পর্যন্ত অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল। এ বার ভোটের আগেই সিএএ কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। মতুয়া, নমশূদ্র-সহ উদ্বাস্তুদের ভোট তাই বিজেপির পকেটেই যাবে বলে আশাবাদী ছিলেন গেরুয়া শিবিরের অনেকে। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তিতে কিছু শর্ত থাকায় মতুয়ারা বিভ্রান্ত। আবেদন করা নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছেন অনেকে।

মতুয়াদের একটা বড় অংশ এর বিরোধিতা করে পথেও নেমেছেন। তাই সিএএকে হাতিয়ার করে জয়ের পথ মসৃণ হবে বলে ধরে নিলেও কিছুটা চিন্তায় গেরুয়া শিবির। নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে বনগাঁ, বাগদা,গাইঘাটা, ঠাকুরনগরে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ-অবরোধে কিছুটা যেন ব্যাকফুটে বিজেপি। মতুয়াদের একটা বড় অংশের বিক্ষোভ, প্রতিবাদের জেরে সিএএ নিয়ে ভোটের প্রচারেও ঝড় তুলতে দেখা যাচ্ছে না বিজেপি প্রার্থীকে।

এর পাশাপাশি বারুনি মেলার মাঝেই বড়মা’র মন্দির দখল নিয়ে শান্তনু ঠাকুরের উপর মতুয়াদের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ। তালা ভাঙার ঘটনাটিকে বারে বারে প্রচারে তুলে ধরে ভোটবাক্সে ফায়দা তুলতে চাইছে তৃণমূল। এ বারের ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে শান্তনু ঠাকুরের দাপট কমাতে হবে বলে মতুয়া, পাগল, গোঁসাই, দলপতিদের বারংবার বলছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।

বাগদায় প্রচারে শান্তনুকে গো-ব্যাক স্লোগান, অবরোধে বিজেপি

সিএএ নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারের পাশাপাশি বড়’মার মন্দিরের তালা ভাঙার ঘটনার ভিডিয়ো মতুয়া ভক্তদের দেখানোর পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। তবে শান্তনু ঠাকুর আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলছেন, মতুয়া-নমশুদ্রদের ভোট এবারও ঢেলে বিজেপিতেই পড়বে। যদিও এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের অভিযোগ, ‘গত পাঁচ বছরে বনগাঁর জন্য কিছুই করেননি।’

এরপরেই শান্তনু ঠাকুর বনগাঁ কেন্দ্রে সাংসদ তহবিলের টাকায় কোথায় কোন খাতে কী খরচ করেছেন, তা নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন। কিন্তু মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে তিনি মুখ বুজে রয়েছেন বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘মতুয়া উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া কেন্দ্রের দায়িত্ব। ফেসবুক পেজে কোনও ভাবে হয়তো তা বাদ পড়ে গিয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *