Sandeshkhali Incident,সন্দেশখালি: তদন্ত হোক শীর্ষ কোর্টের নজরদারির মধ্যে, আর্জি – sandeshkhali a woman appealed in supreme court for supervision entire viral video case


এই সময়, কলকাতা ও সন্দেশখালি: সন্দেশখালি নিয়ে ফের নতুন আবেদন সুপ্রিম কোর্টে! লোকসভা ভোটের দফা যত এগোচ্ছে, ততই নতুন মোড় নিচ্ছে সন্দেশখালি ইস্যু। গত দেড় সপ্তাহে একের পর এক ভিডিয়ো ভাইরাল (যার কোনওটির সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) হওয়ার পরে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল।ষড়যন্ত্র করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে এই সব ফেক ভিডিয়ো তৈরি করে জোড়াফুল বাজারে ছড়াচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যাঁর ভিডিয়ো ঘিরে এই বিতর্ক প্রথম মাথাচাড়া দিয়েছে, সন্দেশখালি-২ ব্লকের সেই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল ইতিমধ্যেই ফেক ভিডিয়োর ইস্যুতে সিবিআই ও কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেছেন।

সোমবার হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানিতে জানা গেল, সাম্প্রতিক এই সব বিতর্কের প্রেক্ষিতে সন্দেশখালির এক মহিলা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে যাবতীয় ঘটনাক্রমের তদন্ত চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছেন। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে বিষয়টি উল্লেখ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।

এজি এদিন জানান, গঙ্গাধরের বিষয়টিও সেখানেই তোলা হবে। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গভাইয়ের বেঞ্চ অন্য মামলায় ব্যস্ত থাকায় সেখানে বিষয়টি উল্লেখ করা যায়নি। রাজ্যের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সেনগুপ্ত প্রথমে জানান, যেহেতু সন্দেশখালি সংক্রান্ত মূল মামলাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চলছে, তাই সেখানেই গঙ্গাধরের আবেদনের শুনানি হওয়া উচিত।

যদিও শেষ পর্যন্ত বিচারপতি সেনগুপ্ত আজ, মঙ্গলবার দুপুর দু’টোয় শুনানির সময় স্থির করেছেন। আইনজ্ঞ মহলের বক্তব্য, যেহেতু হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের দলবলের বিরুদ্ধে ওঠা জমি দখল ও নারী নির্যাতনের যাবতীয় মামলার তদন্তভার দিয়েছে সিবিআইকে এবং রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে তা চ্যালেঞ্জ করলেও সুপ্রিম কোর্ট তাতে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি—তাই এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তে কোনও বাধা নেই।

Sandeshkhali Incident : নয়া ভিডিয়োয় আরও বিড়ম্বনায় পদ্ম-শিবির

তবে নতুন করে উঠে আসা একের পর এক ভিডিয়ো, তার ভিত্তিতে দায়ের হওয়া এফআইআরগুলির তদন্ত কে করবে, তা নিয়ে একটা আইনি টানাপড়েন রয়েইছে। এরমধ্যে সন্দেশখালির এক মহিলা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে যাবতীয় তদন্তের আবেদন জানানোয় তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।

এরমধ্যে সন্দেশখালির আরও এক মহিলা এদিন দাবি করেছেন, তাঁকে দিয়ে জোর করে শাহজাহান ও তাঁর অনুগামী শিবু হাজরা, উত্তম মণ্ডলদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মতো অভিযোগ করানো হয়েছে। চল্লিশোর্ধ এই মহিলা স্বামী বিচ্ছিন্না, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের পাড়াতেই থাকেন এই মহিলা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি তিনি এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা প্রত্যাহার করার কথা জানান। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকার কয়েকজন তাঁকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই মহিলার ভাই এদিন বলেন, ‘সন্দেশখালিতে যখন উত্তম সর্দার ও শিবু হাজরার পোল্ট্রি ফার্মে আগুন লাগানো হয়েছিল, তখন পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল। আমার দিদি আমাকে ছাড়ানোর জন্য বিজেপি নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন। তখন দিদিকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করানো হয়। দিদি এখন অভিযোগ তুলে নিতে চাইছে। তাতেই এলাকার প্রতিবেশী বিজেপি নেতা-কর্মীরা দিদিকে হুমকি দিচ্ছেন।’

ওই মহিলা সন্দেশখালি থানায় বিষয়টি জানানোর পরে তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশ পোস্টিং করা হয়েছে। আবার গত দু’দিনে ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো ক্লিপে (যার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এলাকার মহিলাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলছেন—এমন একটা বিষয়ও সামনে এসেছে।

সন্দেশখালি নিয়ে এই চাপানউতোরের মধ্যে এদিনও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বিজেপির বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পনামাফিক ষড়ষন্ত্রে’র অভিযোগ তুলেছেন। মমতার কথায়, ‘সন্দেশখালির মা-বোনেদের অপমান করার জন্য টাকা খরচ করছে, বোমা চালাচ্ছে, মদ বেচছে—যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে। মা-বোনেদের এই অসম্মান করবেন না। সন্দেশখালি হলো মোদীর সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি।’

যদিও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই সব ভিডিয়োর পিছনে রাজ্যের শাসক দলের পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘তৃণমূল ওখানে (সন্দেশখালি) শূন্য। তৃণমূল মানে পুলিশ, পুলিশ মানে তৃণমূল। এই যে আইপ্যাককে দিয়ে পুরো ভিডিয়ো ষড়যন্ত্র হয়েছে, এর পিছনে এসপি, আইসিও আছে।’ তাঁর দাবি, ‘নির্বাচন কমিশনকে বলব, সন্দেশখালির যে মা-বোনেদের জন্য প্রধানমন্ত্রী লড়াই করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় কমিশন হস্তক্ষেপ করুক। শুধু সন্দেশখালি থেকে এক লক্ষ লিড দেবো। লিখে রাখুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনার কপালে কী দুঃখ রয়েছে, দেখে রাখুন!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *