কলকাতা মেট্রোর পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের এখনও বেশ কিছু অভিযোগ। ‘উপযুক্ত-সংখ্যক মোটরম্যান নেই কলকাতা মেট্রোয়’, ‘এত বেশি শূন্যপদ বলেই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ট্রেন চলছে মেট্রোর ট্র্যাকে’, ‘একটা মহানগরে এত তাড়াতাড়ি মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া যায় না— অন্তত রাত ১১টা পর্যন্ত তো মেট্রো চলুক’, এমন সব বক্তব্য যাত্রীদের।
ঘটনা, মেট্রোর পার্পল লাইনে ট্রেন চলে ৫০ মিনিট পর পর, সেখানে শেষ ট্রেন ছাড়ে বিকেল সাড়ে ৩টেয়। তুলনায় অরেঞ্জ লাইনের অবস্থা ‘একটু ভালো’। ট্রেন ছাড়ে ২০ মিনিট পর পর এবং শেষ ট্রেন ছাড়ে বিকেল ৪টে ৪০ মিনিটে। এমনকী, কবি সুভাষ ও দক্ষিণেশ্বরের মধ্যেও শেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে।
এই অবস্থারই এ বার হয়তো পরিবর্তন হতে চলেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে। মেট্রোর রেক যাতে মোটরম্যানের বদলে কম্পিউটারের ভরসায় চলতে পারে, সে জন্যই সব ক’টি লাইনে চালু করা হচ্ছে সিবিটিসি সিগন্যালিং সিস্টেম। যার মধ্যে রয়েছে ব্লু-লাইনও। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত বিস্তৃত এই লাইনটিই দেশের প্রাচীনতম মেট্রো রেলের লাইন।
ইতিমধ্যেই ৪০ বছরের পুরোনো ওই লাইনে সিবিটিসি সিগন্যালিং সিস্টেমের জন্য খরচ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। অরেঞ্জ লাইন অর্থাৎ কবি সুভাষ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনে এই ব্যবস্থা চালু করতে ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কলকাতা মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, এই ব্যবস্থায় ট্রেন চালানোয় মোটরম্যানের কোনও ভূমিকা থাকে না। আগামী দিনে ট্রেনের কেবিনে শুধু প্রশিক্ষিত কোনও ‘ট্রেন অপারেটর’ রাখলেই হবে।
মেট্রোর কর্তারা জানাচ্ছেন, অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির প্রয়োগে ইতিমধ্যেই ইউরোপের স্পেন, ডেনমার্ক-সহ বেশ কয়েকটি দেশে চালকহীন ট্রেন চালানো শুরু হয়েছে। দিল্লিতেও এই পরিষেবা চলছে।
কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলছেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এই সিস্টেম বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কলকাতা মেট্রোর পুরো নেটওয়ার্ক চলবে সিবিটিসি সিগন্যালিং ব্যবস্থার অটোম্যাটিক ট্রেন কন্ট্রোল মোডে। মেট্রোর যাত্রীদের কাছে এটা নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।’