লোকসভা ভোটে শহরে নিরাপত্তা দিতে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল সরবরাহ করতে গিয়ে কার্যত রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকদের। ওই বিভাগের একাধিক আধিকারিকের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জল লাগবে বলে রাত ২টো, ৩টে-তেও ফোন পাচ্ছেন তাঁরা।তাঁরা জানাচ্ছেন, আধ ঘণ্টার মধ্যে জলের ব্যবস্থা করে মাঝরাতে যখন চোখ একটু লেগে আসছে, তখনই ফের বেজে উঠছে মোবাইল ফোন— কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য জল পৌঁছতে হবে আর এক জায়গায়। গত শনিবার, ২৫ মে লোকসভার ষষ্ঠ দফার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সপ্তম ও শেষ দফার ভোটের জন্য কলকাতায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর।
কমিশন জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও বাড়তে পারে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪৪টি ওয়ার্ডের ১৫৭টি জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখা হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পানীয় জল এবং স্নানের জলের ব্যবস্থা করতে গিয়ে এখন নাজেহাল অবস্থা কলকাতা পুরসভার অফিসারদের।
পুরসভা সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জল প্রয়োজন বলে ফোন কখনও আসছে লালবাজার থেকে, না-হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে সরাসরি ফোন করছেন ব্যটেলিয়নের দায়িত্বে থাকা অফিসার। কলকাতা পুরসভার বক্তব্য, একে এই চাপ, তার উপর আজ, শুক্রবার সকালে শুরু হবে ভোটকেন্দ্রের বুথে বুথে জল পৌঁছনোর কাজ।
কারণ, শহরের অধিকাংশ বুথেই আজ, শুক্রবার দুপুর ৩টের মধ্যে পৌঁছে যাবেন ভোটকর্মীরা। নির্বাচন কমিশনের তরফে কলকাতা পুরসভাকে ২৫০ পাতার একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। যে তালিকায় রয়েছে শহরের সমস্ত বুথের নাম এবং ঠিকানা। প্রতিটি বুথের ভোটকর্মীদের পানীয় জলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে।
বাংলায় লোকসভা ভোট শুরু হয়েছে ১৯ এপ্রিল। কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম সব দলের কাউন্সিলারদের জানিয়েছিলেন, কারও ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা হলে যেন সরাসরি তাঁকে ফোন করে বলা হয়। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘বছরের ৩৬৫ দিনই ঘড়ির কাঁটা ধরে পানীয় জলের সরবরাহ করে যেতে হয়। একটু এ দিক-ও দিক হলেই গোলমাল। ভোটপর্বে এটা নিয়ে আমরা বাড়তি সতর্ক।’