Lok Sabha Election 2024 : ভোটদানের হারে শীর্ষে বাংলা, অনেক পিছনে ইউপি-গুজরাট – lok sabha election 2024 sixth phase west bengal reached top position number of voting


আজ, শনিবার এবারের লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোট। তার আগে রাজনৈতিক মহলের যাবতীয় আশঙ্কা উড়িয়ে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের শেষে ভোটদানের নিরিখে শীর্ষ স্থানে পৌঁছে গেল বাংলা। ঐতিহ্য বজায় রেখে এবারও এ রাজ্যেই সবথেকে বেশি মানুষ ভোটে অংশ নিয়েছেন। ভোটদানের হারে বাংলার থেকে বেশ কয়েক কদম পিছিয়ে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র কিংবা বিহার। ঘটনাচক্রে এগুলি আবার সবই বিজেপি বা তাদের জোট শাসিত রাজ্য।কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ষষ্ঠ দফা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে গড় ভোটদানের হার প্রায় সাড়ে ৭৮ শতাংশ। সেখানে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং বিহারের মতো রাজ্যে গড়ে ৫৫-৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ছ’টি দফায় গড়ে ভোট পড়েছে ৫৭ শতাংশ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভোটে মানুষের যোগদানের উপর গণতন্ত্রেরর সাফল্য-ব্যর্থতা অনেকটা নির্ভর করে। সেদিক থেকে দেশের বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় কয়েক যোজন এগিয়ে রয়েছে বাংলা। এর জন্য পশ্চিমবঙ্গবাসীর রাজনৈতিক সচেতনতাকেই মূল কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ষষ্ঠ দফা পর্যন্ত কোথায় কত শতাংশ ভোট পড়েছে

এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রথম কয়েকটি দফায় পশ্চিমবঙ্গে ভোটদানের হার ২০১৯-এর তুলনায় বেশ খানিকটা কমে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছিল কমিশন। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় ভোট ছিল উত্তরবঙ্গে। সেই সময়ে রাজ্যে প্রচণ্ড গরমও ছিল। তবু প্রথম দফায় ভোটদানের হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। কিন্তু সার্বিকভাবে অন্য দফায় ভোটদানের হার কমার পিছনে অত্যধিক গরমকেই ভিলেন বানিয়েছিলেন অনেকে।

কেউ কেউ আবার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা ভোট দিতে না আসার কারণেই ভোটদানের হার কমে গিয়েছে। দিলীপ ঘোষের মতো একাধিক বিজেপি নেতা দাবি করেছিলেন, এবার রাজ্যের প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় ভুয়ো ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি। সেজন্যই ভোটদানের হার কমেছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের দিকে ভোট এগোতেই ভোটদানের হার বাড়তে শুরু করে। কমিশনের রেকর্ড বলছে, গত তিন দফায় বাংলায় গড়ে ৭৫-৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে।

কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় বাংলায় ভোটের হার ছিল ৮১.৯১ শতাংশ। দ্বিতীয় দফায় ৭৫.৫৯ শতাংশ, তৃতীয় দফায় ৭৭.৫৩ শতাংশ, চতুর্থ দফায় ৮০.২২ শতাংশ, পঞ্চম দফায় ৭৮.৪৫ শতাংশ এবং ষষ্ঠ দফায় ৮২.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। ষষ্ঠ দফায় রাজ্যের একাধিক জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। তা সত্ত্বেও ভোটদানের হার মোটের উপর স্বাভাবিকই রয়েছে। এটাকে নিজেদের বিরাট সাফল্য বলে মনে করছে কমিশন।

কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ দেশের আর পাঁচটা রাজ্যের তুলনায় রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি সংবেদনশীল রাজ্য। এখানকার মানুষ রাজনৈতিক ভাবেও সচেতন। পশ্চিমবঙ্গে নির্বিঘ্নে ভোট করানো আমাদের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তার জন্য আলাদা স্ট্র্যাটেজিও নেওয়া হয়েছিল। তাতে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি বলা যায়।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা আইএসআইয়ের অধ্যাপক শুভময় মৈত্রের ব্যাখ্যা, ‘পশ্চিমবঙ্গে ইলেক্টোরাল লিটারেসির হার বেশি। বেশিরভাগ মানুষ রাজনৈতিক সচেতন। সেজন্যই ভোটদানের হার বেশি। অন্যান্য রাজ্যে যখন ভোটদানের হার কমেছে, তখন বাংলায় বড় অংশের মানুষ কষ্ট করে বুথে এসেও ভোট দিয়েছেন। আমার মতে, এটা গণতন্ত্রের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর।’

Lok Sabha Election 2024: ৫১ আসনে ৫৫%-এর কম ভোট! সবচেয়ে কম ভোটদানের হার কোন কোন রাজ্যে?

বর্ষীয়ান নেতা তথা দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে খুব একটা হেলদোল থাকে না। সেজন্য ওখানে কম ভোট পড়ে। আমাদের রাজ্যের লোকেরা অনেক বেশি রাজনৈতিক সচেতন। যে কোনও সুস্থ গণতন্ত্রে এটাই হওয়া উচিত।’

বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়ার ব্যাখ্যা, ‘এটা ঠিকই পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অনেক বেশি রাজনৈতিক সচেতন। সেজন্যই হয়তো ভোটটা বেশি পড়ে। আবার এটাও ঠিক, এখানে ভোটে নানা ধরনের কারচুপিও হয়। তাতেও ভোটদানের হার বাড়ে। তবে এবার সেটা অনেকটাই আটকানো গেছে। সেজন্যই গতবারের তুলনায় এবার ভোটদানের হার কিছুটা হলেও কমেছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *