Sukant Majumder,দুই সভাপতিই মন্ত্রিত্বে, পদ্মবনে নয়া ‘মালি’ কে? – sukant majumder take oath as a union minister of west bengal


মণিপুস্পক সেনগুপ্ত, এই সময়
রবিবার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তৃতীয় মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মুহূর্তেই স্পষ্ট হয়ে গেল, বিজেপিতে সাংগঠনিক রদবদল আসন্ন। সেটা যেমন সর্বভারতীয় স্তরে, তেমনটাই বাংলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।রবিবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। একই দিনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন ইনিংস শুরু করলেন বঙ্গ-বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। আজ না হোক কাল, তাঁদের দু’জনকেই ছাড়তে হবে যথাক্রমে সর্বভারতীয় ও রাজ্য বিজেপি সভাপতির কুর্সি।

কারণ, বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক ব্যক্তি মন্ত্রিসভা ও দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। ফলে সর্বভারতীয় ও রাজ্য স্তরে পদ্মের ‘মালি’র ভূমিকায় কারা বসবেন, তা নিয়েই এখন জোর চর্চা গেরুয়া শিবিরে। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে প্রত্যাশামতো সাফল্য না আসায় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় দিলীপ ঘোষকে।

তাঁর ছেড়ে যাওয়া কুর্সিতে বসানো হয় বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্তকে। সূত্রের খবর, সুকান্তর নাম বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার কাছে প্রস্তাব করেছিলেন দিলীপই। এমনিতে জুনেই শেষ হচ্ছে রাজ্য সভাপতির পদে সুকান্তর তিন বছরের মেয়াদকাল। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, বাংলায় ২০২৬ বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে সেই দিলীপকেই আবার ফিরিয়ে আনা হতে পারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদে।

কারণ, এই মুহূর্তে বঙ্গ-বিজেপির সংগঠন অভিজ্ঞ হাতে থাকার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করছেন না দলের কেউই। আবার বিজেপির একাংশের যুক্তি, তৃণমূলের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে হলে বাংলাতেও বিজেপির একজন মহিলা সভাপতি দরকার। সেক্ষেত্রে রাজ্য সভাপতির হওয়ার দৌড়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়, শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, অগ্নিমিত্রা পল, মালতী রাভার নাম আছে। পদ্মে চর্চা চলছে কলকাতা দক্ষিণ থেকে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর নাম নিয়েও।

আবার পদ্মের মধ্যেই দাবি উঠেছে, জনজাতি ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে কুড়মি সম্প্রদায়ের বিজেপি নেতা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে নতুন রাজ্য সভাপতি করা হোক। বিজেপি সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীর পছন্দের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গ-বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের নামও সম্ভাব্য রাজ্য সভাপতি হিসেবে ভাসছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে। আবার শুভেন্দুকেই রাজ্য সভাপতি করতে হলে তাঁকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়তে হবে।

আবার বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘সর্বানন্দ সোনোয়াল অসম বিজেপির রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন। বছর খানেক দুই গুরুদায়িত্ব একসঙ্গে সামলান তিনি। তারপর রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়েন। বাংলাতেও এরকম দৃষ্টান্ত আছে। তপন শিকদার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরও মাস ছয়েক রাজ্য সভাপতির পদে ছিলেন। আগে নাড্ডাজির বদলে নতুন কেউ সর্বভারতীয় সভাপতি হবেন, তারপর বাংলায় সভাপতি বদল হবে।’

Dilip Ghosh on Sukanta Majumdar: দায় আমার নয় গো…, দোষারোপে পদ্ম-নেতৃত্ব! বেসুরো দিলীপ-সুকান্ত

রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী না হলেও জুনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হিসেবে নাড্ডার মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পর তাঁকে আর দ্বিতীয় দফায় সভাপতি করা হতো না। তাঁর তিন বছরের জামানায় বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে বিজেপিকে। দলের সভাপতির চেয়ারে বসে অমিত শাহ পার্টির দুর্গ যেভাবে মজবুত করেছিলেন, নাড্ডা তা অটুট রাখতে পারেননি, অন্তত ভোটের ফলাফল সে কথাই বলছে।

নতুন সভাপতি হিসেবে যাঁদের নাম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছিল, তাঁরাও এদিন নরেন্দ্র মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়েছেন। যেমন, ধর্মেন্দ্র প্রধান, ভূপেন্দ্র যাদব, মনোহরলাল খট্টর, শিবরাজ সিং চৌহান। তবে এবারের ভোটে হেরে যাওয়া প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ যাওয়া অনুরাগ সিং ঠাকুরের নামও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভাসতে শুরু করেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *