সূত্রের খবর, মিটিংয়ের শুরুতেই কয়েক জন কাউন্সিলার পুরসভার সামগ্রিক অচলাবস্থার দায় পুরপ্রধান মলয় রায়ের ঘাড়ে ঠেলে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী তাঁদের ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন। বলেন, এটা দলের বৈঠক নয়, প্রশাসনিক বৈঠক। এর পর ফিরহাদ বলেন, ‘ছ’মাস ধরে বোর্ড মিটিং হবে না? দল টিকিট দিয়ে কাউন্সিলার করেছে। পুর পরিষেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিতে হবে।’
জানা গিয়েছে, পুরভার এগজ়িকিউটিভ অফিসারকেও ধমক দেন ফিরহাদ। ফিনান্স অফিসারকেও সমস্ত বকেয়া বিল ছাড়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নির্বাচিত পুরবোর্ড থাকতে কেন বোর্ড মিটিং হবে না সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। বৈঠকে মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ থাকতেই পারে। সে জন্য বোর্ড মিটিং বন্ধ থাকবে এটা বরদাস্ত করা হবে না।’
কাউন্সিলার ও পুরপ্রধানদের মধ্যে বিবাদ দলীয় স্তরে কথা বলে ঠিক করতে হবে বলেও জানান তিনি। এর পরই কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর পর থেকে পরপর তিন বার বোর্ড মিটিং বাতিল হলে পুরবোর্ড ভেঙে দিয়ে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
মন্ত্রীর ধমক খেয়ে আগামী ২২ জুন পরবর্তী বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বোর্ড মিটিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী বোর্ড মিটিং না হলে পুরসভা ভেঙে যায়। আমরা সে সব চাই না। আমি এক মাস সময় দিয়ে গেলাম। এর মধ্যে আমার নির্দেশ রূপায়ণ না হলে পুরসভার আধিকারিকদের কাছ থেকে জবাব চাওয়া হবে।’
পানিহাটির হাল ফেরাতে বৈঠকে মন্ত্রী সমস্ত কাউন্সিলারদের যেখানে যেখানে রাস্তা এবং নিকাশি খারাপ তার তালিকা তৈরি করে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কেএমডিএ ওই রাস্তা এবং নিকাশির কাজ করে দেবে। পানিহাটিকে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরাতে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ দপ্তরের পুর পারিষদ আশিস দেবরায়কে আগামী বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে গভীর নলকূপ বসিয়ে সমাধানের কথা বলেছেন মন্ত্রী। নতুন জল প্রকল্পের কাজও দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ভাগাড় সমস্যা প্রসঙ্গে আর রামচন্দ্রপুর ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলা হবে না বলে মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
দু’টি বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট চালু করার কথাও এ দিন জানান ফিরহাদ। মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে যান, পুরসভার কাজে অর্থের কোনও অভাব হবে না।