Mamata Banerjee : ‘অ্যারেস্ট করিয়ে ছাড়ব’, মমতার তিরে নেতা-পুলিশ – cm mamata banerjee warned if footpath occupied with money accused will be arrested


এই সময়: দলের নেতা হোন বা পুলিশ— টাকা নিয়ে ফুটপাথ দখল করে হকার বসালে কেউই যে নিস্তার পাবেন না, রীতিমতো উদাহরণ টেনে তা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, এমন অভিযোগ পেলে তিনি অ্যারেস্ট করিয়েই ছাড়বেন, সে যত বড় কেউকেটাই হোন না কেন।জবরদখল নিয়ে গত সোমবার পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত প্রশাসনিক বৈঠকেই নিজের প্রশাসনকে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরে কলকাতা-সহ রাজ্যজুড়ে অভিযানে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসন। বৃহস্পতিবার নবান্নে হকার সংক্রান্ত বৈঠকে আগের বার্তাই আরও কয়েকগুণ কড়া হয়ে এল। এবং এই সাবধানবাণী যে শুধু কথার কথা নয়, কার্যক্ষেত্রেও যে তিনি বিন্দুমাত্র আপস করছেন না, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিকের গ্রেপ্তারির প্রসঙ্গ টেনে তা-ও পরিষ্কার করে দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

দলের নেতাদের বিষয়ে তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নিলেও, পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে দুর্নীতিদমন শাখা এবং সিআইডি-কে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। আর দলের কাউন্সিলারদের প্রতি তৃণমূলনেত্রীর বার্তা— লোভ সংবরণ করুন। ডাল-ভাত-মাছ-তরকারিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

এ দিন বৈঠকে উচ্ছেদ প্রসঙ্গ উঠতেই মমতা বলেন, ‘হাতিবাগানে পুরো রাস্তা দখল হয়ে গিয়েছে। এতে আমাদের কাউন্সিলারদেরও অনেক দোষ আছে। তাঁরা ভাবছেন বসিয়ে দিলাম, মাসে মাসে চাঁদা পেলাম, হয়ে গেল। ডাল-ভাত-মাছ-তরকারি খেয়ে কি সন্তুষ্ট হওয়া যাচ্ছে না? খেতে কী লাগে?’ তাঁর পরামর্শ, ‘বাঁচার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু কাজে লাগান। বেশি লোভ ভালো নয়। লোভ সংবরণ করুন।’

পুলিশও যে তাঁর আতসকাচের নীচে রয়েছে, তা বুঝিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর জন্য স্থানীয় নেতা এবং পুলিশ সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রথমে বসাবেন, তার পর বুলডোজ়ার দিয়ে তুলে দেবেন, এটা বরদাস্ত করব না।’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘প্রথম থেকেই কড়া হতে হবে। যে কাউন্সিলারের এলাকায় এটা হবে, যে নেতার এলাকায় হবে, তিনি গ্রেপ্তার হবেন। ডাবগ্রামে কিন্তু ব্লক সভাপতিকে গ্রেপ্তার করিয়েছি। সরকারের জমি ২-৩ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া চলবে না।’

উচ্ছেদ অভিযান চালু হওয়ার পর হকারদের একাংশ চাঁদার নামে তোলাবাজির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। এই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কানেও পৌঁছেছে। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, ‘পুলিশ, দলের নেতা, ইউনিয়ন লিডাররা গরিব হকারদের থেকে চাঁদা তুলবেন না। বেআইনি কিছু হলে পুলিশ-ডিএম যে-ই হোন, ছাড়া হবে না।’

অতঃপর সুর আরও চড়িয়ে পুলিশকে নিশানায় রেখে মমতার বক্তব্য, ‘যে যার মতো লুটে নিচ্ছে, যেন লুট করা অধিকার। পুলিশের মধ্যে দেখছি লোভ বেড়ে যাচ্ছে। ভাবছে, আমি তো দু’বছর ওসি আছি, যতটা পারি করে নিই। এ বার থেকে দুর্নীতিদমন শাখাকে স্ট্রং করতে হবে। যদি কোনও পুলিশ ইন্ধন দেয়, সরিয়ে দেবো। মনে রাখবেন, সরকার কিন্তু এটা করতে পারে।’

Mamata Banerjee : ‘উচ্ছেদ লক্ষ্য নয়, এক হকারের একটিই জায়গা’, পরিকল্পনা জানালেন মমতা

শুধু পুলিশ-প্রশাসন নয়, দলের নেতা-মন্ত্রীদেরও তোপ দেগেছেন মমতা। গত সোমবারের বৈঠকে নাম করেই মন্ত্রীদের তিরস্কার করেছিলেন। এ দিন কারও নাম না-করলেও তাঁর বার্তা, ‘আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই, আর যেন কেউ কোথাও নতুন করে না বসেন, সেটা জেলাশাসককে দেখে নিতে হবে। কোনও নেতা যদি ইন্ধন দেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করে নেবেন সঙ্গে সঙ্গে। তিনি যে দলেরই হোন। কোনও পুলিশ যদি কিছু করে, সেই পুলিশকেও গ্রেপ্তার করা হবে। উপরতলার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করবে।’

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিনও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে তিনি প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই করবেন। সেখানেও তিনি কোনও আপস করবেন না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *