বর্জ্য পৃথকীকরণের জন্য কলকাতা ও বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় বছর খানেক আগেই নীল ও সবুজ রঙের বালতি বিলি করা হয়েছে। একটি পচনশীল, অন্যটি অপচনশীল বর্জ্যের জন্য। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশের দু’ধরনের বর্জ্য মিলিয়ে দেওয়ার কারণে পৃথকীকরণে সমস্যা হচ্ছে।
পাশাপাশি পরিকাঠামোর অভাব তো আছেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে বছরে প্রায় ৩ লক্ষ ১৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টন বর্জ্য পৃথকীকরণ হয়। বাকিটা করা যায় না। অথচ পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, উৎসেই বর্জ্য পৃথকীকরণ না হলে তা ফের ব্যবহার করা সম্ভব নয়। সে কারণেই বিশেষ যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুরের ‘সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ থেকে এই যন্ত্র বসানোর ধারণা মিলেছে। মেশিনটির সাহায্যে মিশ্রিত বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিক থাকলেও তা আলাদা করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া, যন্ত্রের সাহায্যে তা গুঁড়ো করাও যাবে। যা দিয়ে তৈরি হবে ওই আরডিএফ। এটি বিক্রি করে অর্থও আসবে। সেই সঙ্গে কমবে বর্জ্যের পরিমাণ, কমবে দূষণ।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ সাধন ঘোষ এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভালো পদক্ষেপ সন্দেহ নেই। বিশ্বের সব উন্নত দেশই এখন বর্জ্য পুনর্ব্যবহারে জোর দিচ্ছে। বর্জ্য থেকে তৈরি আরডিএফ-কে জ্বালানি টু সিমেন্ট, নানা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনার ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আবর্জনা জমা করার প্রয়োজনও পড়বে না।’
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর বক্তব্য, ‘শুধু কলকাতা বা বিধাননগরে এই পরিকল্পনা সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। কোনও শহরেই জঞ্জালের পাহাড় থাকা পরিবেশের জন্য ভালো নয়।’