Buddhadeb Bhattacharjee: ইদের সময়ে মাটন বিরিয়ানি মাস্ট – former cm buddhadeb bhattacharjee driver muhammad osman says he likes to eat mutton biryani on eid


মহম্মদ ওসমান (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দীর্ঘদিনের গাড়ির চালক)
দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর ধরে আমি বুদ্ধদার গাড়ি চালিয়েছি। লোকে আমাকে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ির ড্রাইভার হিসাবে চিনলেও ওঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ছিল দাদা-ভাইয়ের। কোনও দিনই ওঁকে স্যর বলে সম্বোধন করিনি। বরাবর ‘বুদ্ধদা’ বলেই ডেকেছি। উনিও আমাকে সব সময়ে সম্মান দিয়ে কথা বলতেন।বুদ্ধদার জন্য দু’টো সাদা অ্যাম্বাসাডর বরাদ্দ ছিল। তার একটার নম্বর ০০০১। আর একটার নম্বর ০০০২। দু’টোই আমি চালাতাম। অন্য কোনও ড্রাইভার বুদ্ধদা পছন্দ করতেন না। শেষবার ২০২১-এ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে ওঁকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। ড্রাইভারদের অনেকে হয়তো তুই-তোকারি করেন। উনি কিন্তু আমাকে সব সময়ে ‘আপনি’ বলেই সম্বোধন করেছেন। ওঁর মতো ভদ্র ও সজ্জন মানুষ খুব কম দেখেছি।

আজ টিভিতে খবর দেখে জানতে পারি, উনি আর নেই। আমার শরীরটাও ভালো নেই। অনেক দিন ধরেই আমি অসুস্থ। তা সত্ত্বেও ছেলেকে বললাম, আজ অন্তত একবার বুদ্ধদাকে দেখে আসি। আজ শেষবারের মতো দেখে গেলাম ওঁকে। আর তো কোনও দিন দেখা হবে না। যে মানুষটার সঙ্গে এত বছর কাটিয়েছি, তাঁর সঙ্গে আর কোনও দিন দেখা হবে না— এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ওঁর পাশে থাকতে থাকতে ওঁর সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। সেই সুবাদে ওঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। প্রতি বছর ইদের সময়ে ওঁর বাড়িতে সিমুই আর বিরিয়ানি পাঠাতাম। আমার বড় বউমা আফগানিস্তানের মেয়ে। খুব ভাল বিরিয়ানি ও চাঁপ বানায়। বুদ্ধদা মাটন বিরিয়ানি খেতে খুব পছন্দ করতেন। আমার বউমা খুব যত্ন করে ওঁর জন্য মাটন বিরিয়ানি বানিয়ে দিত।

‘সাদা ধুতিতে দাগ লাগেনি…’, ‘বুদ্ধদার’ প্রয়াণে ভারাক্রান্ত অ্যাম্বাসাডর ‘সারথী’ ওসমান
১৯৯৪ সালে আমার একবার কালাজ্বর হয়েছিল। ডাক্তাররা বলে দিয়েছিল, আমি আর বাঁচব না। আমার মতো একজন সাধারণ ড্রাইভারের জন্য বুদ্ধদা লন্ডন থেকে একজন ডাক্তারকে উড়িয়ে এনেছিলেন। সেই সময়ে আমি টানা ১৫ দিন নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী হয়েও রোজ দু’বেলা উনি নার্সিংহোমে এসে আমাকে দেখে যেতেন।

১৯৯৩ সালে বুদ্ধবাবু যখন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিলেন, তখন আমিও সরকারি চাকরি ছেড়ে দিই। আবার যখন উনি মন্ত্রিসভায় ব্যাক করলেন, বুদ্ধদাই আমাকে চাকরিতে ফিরিয়ে আনেন। মুখ্যমন্ত্রীর ড্রাইভার বলে কোনও দিন কারও কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নিইনি। পদ্মপুকুর সিআইটি রোডে সরকারি কোয়ার্টারে থাকি। ছেলেপুলে কিংবা আত্মীয়স্বজনদের জন্যও কিছু করিনি। আজ বুদ্ধদার চলে যাওয়ায় নিজের খুব কাছের একজন আত্মীয়কে হারালাম।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *