Kolkata Police,শব্দবাজি থেকে ছোটদের দূরে রাখতে বকুনি নয়! অন্য রাস্তা, কর্মশালা পুলিশের – kolkata police workshop to keep children away from fire crackers


ধমকে-চমকে বা বকাবকি করে নয়। এ বার ভালোবেসে, বুঝিয়ে-সুজিয়ে কচিকাঁচাদের শব্দবাজি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে প্রশাসন। সে জন্য কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন আবাসন ও স্কুলে কর্মশালা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে পরিবেশ দপ্তরের কর্তাদের। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১ সেপ্টেম্বরই শুরু হবে ওই কর্মশালা।গোটা দেশে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সবুজ বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার ছাড়া অন্য সব বাজি নিষিদ্ধ। আবার পশ্চিমবঙ্গে গ্রিন ক্র্যাকারকে হতে হবে শব্দহীন। কারণ, এ রাজ্যে বাজির শব্দসীমা ৯০ ডেসিবেল। ওই শব্দসীমার মধ্যে খেলনা পিস্তলের ক্যাপ ছাড়া অন্য কোনও শব্দবাজি সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। তবে সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কালীপুজো, ছটপুজোর সময়ে কিংবা কোনও আনন্দ উদযাপনে দেদার বেচাকেনা ও ব্যবহার হয় শব্দবাজির।

দুর্গাপুজো ও কালীপুজোয় নিষিদ্ধ বাজির ব্যবহার বন্ধ করতে বছর কয়েক আগে বড় বড় কয়েকটি আবাসনের চাবি নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল বিধাননগর কমিশনারেট। ওই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল, কোনও আবাসন থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু যে সব আবাসনে শব্দবাজি ফাটছিল, সেই সব জায়গায় ঢুকে পুলিশ দেখে, অধিকাংশ বাড়িতেই শব্দবাজি ফাটাচ্ছে শিশু বা কিশোর-কিশোরীরা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নিয়ে রাগারাগি করে নয়, অন্য পথে কচিকাঁচাদের নিরস্ত করতে চাইছে পুলিশ-প্রশাসন। ওই কর্মশালায় পুলিশের পাশাপাশি পরিবেশ দপ্তরের কর্তারাও থাকবেন।

কী হবে ওই কর্মশালায়?
সূত্রের খবর, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি আবাসনে কর্মশালার আয়োজন করে বোঝানো হবে, নিষিদ্ধ বাজি কোনগুলো এবং সেগুলো ব্যবহারে বিপদই বা কতটা। সেই সঙ্গে কোন কোন বাজি ব্যবহার করা যাবে এবং কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে বিপদের ঝুঁকি এড়ানো যাবে, সে সবও তুলে ধরবেন বিশেষজ্ঞরা।

যেমন, নাক ঢাকা মাস্ক এবং চোখে প্রোটেক্টর গ্লাস লাগিয়ে তারাবাতি-তারাকাঠি ফাটালে কোনও বিপদ নেই। লাঠি বা লোহার স্টিকের আগায় বাজি রেখে তাতে আগুন দেওয়াও নিরাপদ। বাজি ফাটানোর জায়গা থেকে চার মিটার দূরে থাকতে বলা হবে ছোটদের। তুলে ধরা হবে বাজির ক্ষতিকর দিকগুলোও। যেমন, বেশ কিছু বাজির আলোয় অনেক ক্ষেত্রেই শিশুদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দেখা দিতে পারে৷

অনেকেরই কানে শোনা, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হয়। কর্মশালায় এ সব ছোটদের সামনে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরবেন চিকৎসকরা। তবে শুধু পড়ুয়াদের নয়, আবাসনে আয়োজিত কর্মশালায় অভিভাবকদেরও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেবেন। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানাচ্ছেন, গত বছর এডি ব্লকের এক বাচ্চা তার বাবার কাছে চকলেট বোমা চেয়ে বায়না করেছিল।

বাস্তবের হিরো! একার চেষ্টায় নাবালিকার অপহরণ রুখলেন সিভিক ভলান্টিয়ার

ছেলের ওই আব্দার মেনে দুর্গাপুজোর সময়ে সেই ব্যক্তি ওই নিষিদ্ধ শব্দবাজি কিনেও দিয়েছিলেন। আর ওই বাজি ফাটাতে গিয়েই ডান হাতের অনেকটাই পুড়ে যায় সেই সময়ে ক্লাস থ্রি-তে পড়া ওই শিশুর। ওই ঘটনা তুলে ধরে অভিভাবকদের কাছে আবেদন করা হবে, তারা যাতে সন্তানদের অন্যায় আব্দার তাঁরা না-মানেন।

তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হবে, কখনও কোনও নিষিদ্ধ শব্দবাজি কিনে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেবেন না। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘অনেক আগেই এই ধরনের পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। সবাইকে না-হলেও কিছু মানুষকে এতে সচেতন করা যাবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *